পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে তুফানগঞ্জ পুরসভা এলাকার বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় দু’বছর ধরে বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া বন্ধ। শহরের অধিকাংশ রাস্তা দীর্ঘদিন বেহাল হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেই। নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হয় না। পথবাতির সংখ্যাও কম। সমস্যার কথা স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিপিএমের রমেশ সরকার বলেছেন, “জবরদখল ও অর্থিক সমস্যায় পরিষেবার অনেক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।”
বাসিন্দারা জানান, শহরের ১২টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা ৩০ হাজার। ছোটবড় মিলিয়ে রাস্তার সংখ্যা শতাধিক। প্রায় ৬০ কিমি রাস্তার মধ্যে বেশিরভাগ পাকা হলেও কিছু এলাকায় কাঁচা রাস্তা রয়েছে। বাজার রোড, হাসপাতাল রোড, জেটি রোড, হরেকৃষ্ণ কলোনি, বাবুপাড়ার রাস্তা বেহাল। নিকাশি নালা সাফাই না হওয়ায় দূষণের সমস্যা বেড়েছে। বৃষ্টি হলে জল উপচে পড়ছে। পরিকাঠামোর সমস্যার অজুহাতে দিনের পর দিনের জলের সংযোগের জন্য আবেদনকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
শহরের কামারপট্টির বাসিন্দা সজল সরকার বলেন, “প্রায় দু’বছর আগে বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ চেয়ে আবেদন করেছি। দেড় হাজার টাকা জমা দিয়েছি। এখনও সংযোগ পাইনি। কবে পাব কেউ জানেন না।” থানা মোড় এলাকার বাসিন্দা শুভময় সরকার বলেন, “নিকাশি আবর্জনায় ভরে আছে। নিয়মিত সাফাই করার কোনও উদ্যোগ নেই। দুর্গন্ধে চলাফেরা করা সম্ভব হয় না।” পুরসভার কর্তারা অবশ্য দাবি করেন এক লক্ষ গ্যালনের নতুন রিজার্ভার তৈরির জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে ৪০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত জমিতে জবর দখলের সমস্যা থাকায় কাজ থমকে আছে। তাই নতুন করে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
পুরসভার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই দিন বলেছেন, “জবরদখল সমস্যা মিটলে রিজার্ভারের কাজ শুরু হবে। ওই কাজ হয়ে যাওয়ার পরে প্রায় দু’হাজার আবেদনকারীকে নতুন করে সংযোগ দেওয়া হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ টাকা না পাওয়ায় উন্নয়নের থমকে গিয়েছে। ২০১১ সালে রাস্তা সংস্কার, নিকাশি সহ অন্য পরিষেবা চাঙা করতে ২ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু একটি টাকাও আসেনি। ফলে সমস্যা বেড়েছে। যদিও পুরকর্তার যুক্তি উড়িয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্ত বর্মা বলেন, “সরকার উন্নয়নের কাজের জন্য যে টাকা দিচ্ছে সেটা দিয়ে কর্মীদের বেতন মেটানো হচ্ছে। তাই কাজ কী করে হবে? পুরসভার তরফে নিজস্ব আয় বাড়ানোর কোনও উদ্যোগ নেই। শুধু রাজ্য সরকারের উপরে দায় চাপিয়ে লাভ নেই।” নালিশ জল-জঞ্জাল-রাস্তা-আলো নিয়ে। |