বিশ্বাস-এর উৎসব কোচবিহারে
যজ্ঞশেষের বৃষ্টিতে ধুয়ে যাবে অনাচার
রাজাদের ঐতিহ্য মেনে লক্ষ আহূতির শিবযজ্ঞকে ঘিরে উৎসব শুরু হয়েছে কোচবিহারে। বিশ্ববাসীর কল্যাণের আকুতি নিয়ে শহর লাগোয়া খাগরাবাড়ি এলাকায় গত সোমবার ওই যজ্ঞ শুরু হয়। প্রথা মেনে বুধবার হল ১২ জন কুমারীর পুজো। আজ, বৃহস্পতিবার সধবা পুজো। ভক্তদের বিশ্বাস, যজ্ঞ শেষে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে। দূর হয়ে যাবে সমস্ত অনাচার।
ভাবগম্ভীর এক পরিবেশে ২০ জন পুজারির সমবেত মন্ত্রোচ্চারণে চলছে আহূতি। উদ্যোক্তারা জানান, শুক্রবার ১৭ মে পর্যন্ত যজ্ঞ চলবে। ঘি, কাঠ, তিল, চাল ইত্যাদি উপকরণ দিয়ে এক লক্ষ বার আহূতি দেওয়া হবে। প্রধান পুরোহিত রুদ্রাক্ষ ঘুরিয়ে আহূতির হিসেব রাখছেন। প্রতিদিন পূণ্যার্থীর ভিড় বাড়ছে। বুধবার কুমারী পুজো থাকায় ভিড় উপচে পড়ে। শিবযজ্ঞ সমিতি সভাপতি হিমাদ্রীশঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “১৯৪৮ সালে মহারাজ জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ধর্মসভার সিদ্ধান্ত মেনে শিবযজ্ঞ শুরু হয়। মহারাজ যজ্ঞের উদ্বোধন করেন। ওই ঐতিহ্য মেনে প্রতি বছর শিবযজ্ঞ হয়। বিশ্ববাসীর কল্যাণ এর উদ্দেশ্য।”
চলছে কুমারী পুজো। বুধবার খাগড়াবাড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
উদ্যোক্তারা জানান, রীতি মেনে সূর্যকান্ত মণির মাধ্যমে সূর্যের রশ্মি প্রতিফলিত করে শিব মূর্তির পাদদেশে যজ্ঞকুণ্ডে অগ্নিসংযোগ হয়। প্রদীপ, দেশলাই বা মোমের আগুন ওই কাজে ব্যবহার করা হয় না। এ বারও রীতির হেরফের হয়নি। যজ্ঞে আহূতির জন্য ৬০ কেজি ঘি, দুশো মন আম, শাল ইত্যাদি কাঠ-সহ অন্য সামগ্রীও আনা হয়। এ ছাড়া সুপারি, কলা, পান। আয়োজকদের পক্ষে বিশ্বজিৎশঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “ওই যজ্ঞ হলে বৃষ্টি হবেই, এ বিশ্বাস আছে ভক্তদের মনে।”
বুধবার ৩ থেকে ৮ বছরের তৃষা চক্রবর্তী, অতসী ভট্টাচার্য, শ্রেয়সী ভট্টাচার্য, অদ্রিজা চৌধুরীর মতো ১২ জনকে মন্দিরে বিশেষ আসনে বসিয়ে পুজো করা হয়। বৃহস্পতিবার সধবা পুজো হবে। শুক্রবার পূণ্যাহূতির পরে দেওয়া হবে শান্তির জল। খাগরাবাড়ি শিবযজ্ঞ সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার মহারাজের সভা পণ্ডিত প্রয়াত রমাশঙ্কর কাব্য ব্যাকরণ স্মৃতি তীর্থ মহাশয় অনাচাবে ডুবে যাওয়া মানুষের ধর্মীয় ও নৈতিক উন্নতির জন্য উদ্বিগ্ন ছিলেন। মহারাজের ধর্মসভায় তিনি তাঁর চিন্তার কথা জানান। বিপদমুক্তির আশায় শিবযজ্ঞের সিদ্ধান্ত হয়। সমিতির সভাপতির লেখা বইয়ে আছে, কোচবিহারের রাজবংশকে শিববংশ বলা হয়। তাই শিবযজ্ঞ করা সমীচীন মনে হল। বইয়ে ৫৯ সালে শিবযজ্ঞ ধর্মসভার সভাপতি মহারাজ জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ বলেছেন, “আমি কামনা করি আমাদের সবার জীবন হোক আপনাদের শিবযজ্ঞের মত মহাযজ্ঞ। সেই যজ্ঞের অনলে পুড়ে যাক হিংসা লোভ স্বার্থপরতা।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.