ছাত্রছাত্রী ফি বাবদ প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা সারদা’র তিনটি অ্যাকাউন্টে জমা রেখেছিলেন শিলিগুড়ির লিঙ্কনস হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। বুধবার শিলিগুড়ি শ্যামল সেন কমিশের অফিসে ওই অভিযোগ করেন লিঙ্কনস হাইস্কুলের অধ্যক্ষা শম্পা দত্তরায়। ওই টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রের খবর, ২০১৩ সালের ১ মার্চ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ফি ২৯ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯৩৫ টাকা তিনটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে থাকা সারদা’র অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলি সারদা রিয়ালিটি, সারদা ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং সারদা হাউসিং প্রাইভেট লিমিটেডের নামে রয়েছে। ওই তিনটি অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করেছে পুলিশ। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, প্রায় ৩৩ বছরের পুরনো ওই স্কুল ২০১০ সালের শেষদিকে সারদা’র মালিক সুদীপ্ত সেন কিনে নেন। তার পর থেকে স্কুল ফি সারদা গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে জমা হত। শিক্ষক-শিক্ষিকার বেতন বাবদ স্কুলের যা খরচ তা সারদা গোষ্ঠীর তরফে দেওয়া হত। এপ্রিল মাসে সুদীপ্ত সেন গ্রেফতার হওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ হিসেব করে দেখেন শেষ দেড় মাসের টাকা ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে রয়েছে। অধ্যক্ষা বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের ফি’র ওই টাকা সারদা’র অ্যাকাউন্টে রয়েছে। তা কমিশনে জানানো হয়েছে।” |
সারদা সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ার পরই স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। বর্তমানে স্কুলে ৯৫০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ কর্মীদের সংখ্যা ১৫০ জন। স্কুল সূত্রের খবর, এই অবস্থায় সমস্ত বিষয় নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিষয়টি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকেও জানানো হয়েছে। স্কুলের যাতে কোনওরকম ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে প্রত্যেকেই চেষ্টা করছেন। অভিভাকরাও স্কুলের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এক অভিভাবক বলেন, “বহু বছরের পুরনো ওই স্কুলের শিলিগুড়িতে সুনাম রয়েছে। তা ব্যবহার করে ফয়দা লোটার জন্যই সুদীপ্ত সেন তা কিনে নিয়েছিলেন। কিন্তু স্কুলের যাতে কোনওরকম ক্ষতি না হয় সে ব্যপারে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে চেষ্টা করব।” স্কুলের অধ্যক্ষা অবশ্য দাবি করেছেন, “বর্তমানে স্কুলের আর্থিক অবস্থা ঠিক রয়েছে। সমস্যা নেই।”
এ দিন কমিশনের অফিসে ২ হাজার ৩১৫টি অভিযোগপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে কোচবিহার থেকে ১১৫টি, জলপাইগুড়ি ৫৩৬, দার্জিলিং ৪২৫, উত্তর দিনাজপুর ৪৯৮, দক্ষিণ দিনাজপুর ২২২, মালদহ ৩৪৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এ ছাড়া বিহার ও অসম থেকে ১৭৪টি অভিযোগ পড়েছে। সবমিলিয়ে গত সাত দিনে ৬ হাজার ৩৬৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনে। এর মধ্যে রবিবার অবশ্য কমিশন বন্ধ ছিল। |