|
|
|
|
বিহারে চলছে খুনোখুনিও |
বাড়ছে জমি ঘিরে শরিকি সংঘর্ষ
স্বপন সরকার • পটনা
|
জমি নিয়ে বিবাদে প্রতিদিন বিহারে গড়ে তিন জন করে খুন হচ্ছে। এর সঙ্গে আছে অপহরণ। পরিস্থিতি এতটাই গভীরে যে সরকার জমি সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তিতে ল্যান্ড ট্রাইব্যুনাল গঠন করেও কূল পাচ্ছেন না। মামলার পাহাড় জমছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে সরকারকে।
জমি সংক্রান্ত ঝামেলার জেরে কোথাও বাবাকে খুন হতে হচ্ছে ছেলের হাতে, কোথাও বা কাকাকে। খুন হতে হচ্ছে অসহায় বিধবাকেও। আর এই খুনোখুনিতে পোয়াবারে ভাড়াটে খুনিদের। গত বছর ডিসেম্বরে গোপালগঞ্জের একটি ঘটনায় সম্পত্তির লোভে তিন ভাইপো খুন করেছিল তাদের কাকাকে। ২০০৯ সালের অক্টোবরে সম্পত্তির ঝামেলায় খাগাড়িয়ার ১৬ জনকে গুলি করে খুন করেছিল একদল ভাড়াটে খুনি। গত বছর জুন মাসে মধুবনিতে জমি জটের কারণে খুন হতে হয়েছিল একই পরিবারের চারজনকে।
এরকম অসংখ্য ঘটনা ছড়িয়ে আছে বিহারের আনাচে-কানাচে। হিসেব বলছে, ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে শুধুই জমি সমস্যার কারণে রাজ্যে ৩৬১৮ জনকে খুন হতে হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে জমি সমস্যার কারণে খুন হয় ৭৬৯ জন। ২০০৮ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ৮২৫। ২০০৯ সালে ৮৩৬ এবং ২০১০ সালে ৯১৬ জন। সংখ্যাটি বছরে বছরে বেড়েই চলেছে। ২০১১ সালে ১০৪১ জনকে খুন হতে হয়েছে।
প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, এই খুনের অন্যতম কারণ হল জমির দাম বৃদ্ধি। গত কয়েক বছরে, রাজধানী পটনা-সহ বিহারের বিভিন্ন জায়গায় জমি বা বাড়ির দাম আকাশ ছোঁয়া হয়ে পড়েছে। ফলে জমির দখল পেতে মরিয়া হয়ে উঠছে শরিক বা আত্মীয়রা। তা থেকেই জন্ম নিচ্ছে শত্রুতা। মরতে হচ্ছে মানুষকে। এই জটিলতা থেকে জন্ম নিচ্ছে মামলা। ফলে অনেক বাড়িতেই দেখা যাচ্ছে ‘আদালতে মামলা থাকায় এই বাড়ি বিক্রি করা যাবে না’ বলে নোটিশ ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। সরকারও বুঝেছে, জমির কারণেই খুনোখুনির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদ্বিগ্ন প্রশাসন ২০১২ সালে জমি সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে বিহার ল্যান্ড ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। এখন পর্যন্ত ২০০টির উপর মামলা নথিভুক্ত হয়েছে এই আদালতে। আর নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৪০টি মামলা।
প্রশাসন জানে, জমি সমস্যায় রাজ্যে যে ভাবে খুন বাড়ছে তাতে একে নিয়ন্ত্রণ করা আপাতত কঠিন। এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) এস কে ভরদ্বাজের কথায়, “জেলার সব পুলিশ সুপাররা এই ব্যাপারে যথেষ্ট সক্রিয়। আমি নিজে জেলায় ঘুরে এই ব্যাপারে তদারকি করেছি। দেখেছি, জমির লোভে মানুষ বাবা, কাকাকেও ছাড় দিচ্ছে না। এটা আমাদের কাছে চিন্তার বিষয় অবশ্যই।” |
|
|
|
|
|