মেয়র পারিষদদের বৈঠকে জলযোগের ব্যয়ে রাশ টেনে এক বছরেই প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বাঁচল কলকাতা পুরসভার। ২০১২ সালের মে মাসের আগে পর্যন্ত মেয়র, ডেপুটি মেয়র-সহ মেয়র পরিষদের ১২ জন সদস্যের এক-একটি বৈঠকে খাবারের খরচ হত ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ঘণ্টাখানেকের ওই বৈঠকের জন্য বিরিয়ানি-মাংস থেকে শুরু করে অনেক পদই থাকত খাবারের প্যাকেটে। তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সেই সংবাদ প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার পত্রিকায়। তার পরেই খরচে লাগাম টানার নির্দেশ দেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, তার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৫টি বৈঠকে খাবার বাবদ খরচ হয়েছে ৯৫ হাজার টাকার মতো। অথচ তার আগের ২৫টি বৈঠকে ওই খরচের পরিমাণ ছিল ১০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
পুরসভার এক পদস্থ অফিসারের কথায়, “২০১২-র মে মাসের আগে মেয়র পরিষদের বৈঠকে ১২ জন থাকলেও ৮০ থেকে ১০০টি খাবারের প্যাকেট আসত। কখনও বা সেই সংখ্যাটা আরও বেশি হত। প্যাকেট-পিছু খরচ ছিল ৪৮০ টাকা।” ওই প্যাকেটে কখনও চিকেন বিরিয়ানি, মটন চাঁপ, ইলিশ পাতুরি ও জলভরা তালশাঁস সন্দেশ থাকত। কখনও বা বাসমতী চালের ভাতের সঙ্গে ভেটকির পাতুরি, গলদা চিংড়ির মালাইকারি, মটন কষা।
ওই অফিসার জানান, গত বছর এই সংবাদ প্রকাশের পরেই পুর প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই মেয়র খাওয়া-দাওয়ায় খরচ কমাতে ব্যবস্থা নিতে বলেন পুরসভার সচিবকে। এখন বিরিয়ানি-মাংস ছেড়ে প্যাকেটে থাকছে স্যান্ডউইচ, পেস্ট্রি, গোটা কয়েক কাজু ও একটা চিপসের প্যাকেট। প্যাকেট প্রতি খরচ কমে দাঁড়িয়েছে ৬০-৭০ টাকায়। প্যাকেটের সংখ্যাও কমেছে। মেয়রের নির্দেশে এখন ওই বৈঠকে ৩০-৩৫ টির বেশি প্যাকেট আসে না।
মাত্র ২৫টি বৈঠকেই প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মতো জলযোগের ব্যয় কমায় মেয়র পারিষদদের কেউ কেউ কিন্তু খুশি। তাঁদের বক্তব্য, সংবাদপত্রে ওই খবর বেরোনোর পরে সাধারণের মধ্যে খুবই বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। |