সুদ কমার আশায় লাফ সেনসেক্সের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শুধু একটি বাক্য। আর দেখার আশ্বাস। তাতেই বুধবার ভরা জোয়ার শেয়ার বাজারে। এতটাই যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাতে পারে, শুধু এই বিশ্বাসে ভর করেই এ দিন ৪৯০.৬৭ পয়েন্ট উঠল সেনসেক্স। দিনের শেষে দৌড় শেষ করল ২০,২১২.৯৬ অঙ্কে। ২০১১ সালের জানুয়ারির পর যা সর্বোচ্চ।
মঙ্গলবারই কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত ৫ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে মূল্যবৃদ্ধির হার। গত ৪১ মাসে এই প্রথম। তার পর থেকে অনেকেই আশা করছিলেন যে এ বার দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ফের এক দফা সুদ কমানোর পথে হাঁটবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এ দিন সেই জল্পনাতেই কার্যত ঘি ঢেলে দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাওয়ের মন্তব্য। এ দিন জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে সুব্বারাও বলেন, “মূল্যবৃদ্ধির হার কমার বিষয়টি আমরা অবশ্যই আগামী ১৭ জুন ঋণনীতির পর্যালোচনার সময় মাথায় রাখব।”
এমনিতে অনেক আগে থেকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের যুক্তি ছিল, মূল্যবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের নীচে নামলে, তবেই তা কিছুটা স্বস্তির জায়গায় পৌঁছবে। তাই তার উপর সুব্বারাওয়ের এই মন্তব্যে সুদ কমার আশায় স্বাভাবিক ভাবেই চাঙ্গা হয়ে ওঠে শেয়ার বাজার। এক লাফে সেনসেক্স বেড়ে যায় ৪৯০ পয়েন্ট। সূচক ফের ঢুকে পড়ে ২০ হাজারের ঘরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজার মনে করে, সুদ কমলে গাড়ি-বাড়ি সমেত বহু জিনিসেরই চাহিদা বাড়বে। তাল মিলিয়ে বাড়বে লগ্নিও। ফলে গতি ফিরবে বৃদ্ধির চাকায়। |
এই আশায় ভর করেই এ দিন ভারতের বাজারে প্রায় ঝাঁপিয়ে লগ্নি করেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, এক দিনেই তারা ভারতের বাজারে ১৬৪৬.৯৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনে ফেলেছে। যার ফলে মসৃণ হয়েছে সূচকের উত্থান।
তবে শেয়ারে লগ্নিকারীদের মধ্যে এ দিন খুশির আবহাওয়া থাকলেও এই উত্থানকে বাজারের পুরোদস্তুর ঘুরে দাঁড়ানো বলে এখনই মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞদের অনেকে। যেমন, অজিত দে বলেন, “মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে বলে এখনই স্বস্তি পাওয়ার কারণ নেই। কারণ, তা কত দিন স্থায়ী হবে, তার উপর নজর রাখা জরুরি। তা ছাড়া, এ দিন শুধু সূচকের অন্তর্গত শেয়ারগুলিরই দাম বেড়েছে। তার মধ্যে আবার বেশি বেড়েছে কিছু নামী শেয়ারের দাম। যা সূচককে দ্রুত উপরের দিকে ঠেলে তুলেছে। কিন্তু সূচকের বাইরের শেয়ারের দাম এ দিন তেমন ভাবে বাড়েনি।”
অনেকটা একই মতের শরিক ফিনশোর ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর লক্ষ্মণ শ্রীনিবাসন। তিনি বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি কমলেও চলতি খাতে বাণিজ্য ঘাটতি এখনও উদ্বেগের কারণ। তা না-কমলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও সুদ কমাতে কতটা সাহসী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।” তাই এই মুহূর্তে সাধারণ লগ্নিকারীদের সাবধানে পা ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। |