শরীরটা তখনও কাঁপছে। লাঠির উপর ভর দিয়ে বিডিও-র টেবিলের সামনে কোনওক্রমে দাঁড়িয়ে ৭৬ বছরের বৃদ্ধের প্রশ্ন, “এটা কোন ধরনের বিচার? জীবিত মানুষকে মৃত বলে ঘোষণা করে দিলেন। যার জন্য বরাদ্দ ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।” তাঁর ভাতা যাতে ফের চালু হয়, সে জন্য রামপুরহাট ২ ব্লকের বিডিও এবং রামপুরহাট মহকুমাশাসকের কাছে সেই আবেদন জানালেন দুনিগ্রামের পীরতলার বৃদ্ধ সালেম শেখ।
মাড়গ্রাম থানার ওই বাসিন্দা ইন্দিরাগাঁধী জাতীয় বয়স্ক ভাতা প্রকল্পের এক জন উপভোক্তা। ভোটার তালিকার পার্ট নম্বর ১১৫\২৯২ এবং রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনার কার্ড নম্বর ২৭১৭৩। দুনিগ্রাম শাখার পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্ট নম্বর ১১২৪২১১। ২০০৮ সাল থেকে গত ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাসে ৪০০ টাকা করে টাকা আসেনি। তিনি বলেন, “টাকা না আসায় ব্লক অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে মৃত বলে তালিকায় দেখানো হয়েছে।” তাঁর প্রশ্ন, “যদি সেটাই হয়ে থাকে তা হলে গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত টাকা পেলাম কী করে?” দুনিগ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়ক নিতাই লেট বলেন, “কেন এমন হল খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না।” পঞ্চায়েত থেকে এ ধরনের তালিকা পাঠানো হয়নি বলে দাবি করেছেন নিতাইবাবু। মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় বলেন, “সালেম শেখের আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি বিডিওকে দেখতে বলব।”
এ দিকে, ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চালে নতুন খড় দেওয়া হয়নি। কোনও ভাবে চেয়ে-চিন্তে দিন কাটছে সালেম শেখের পরিবারের। ভারপ্রাপ্ত বিডিও মলয়কুমার ঘোষ বলেন, “কী ভাবে কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তবে যা হয়েছে দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ। সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হবে।” |