|
|
|
|
চলবে শনিবার অবধি |
বৈশাখী সংক্রান্তিতে মেলা শুরু ক্ষীরগ্রামে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মঙ্গলকোট |
বছরে মাত্র সাত বার ক্ষীরদিঘির জল থেকে উঠে মূল মন্দিরে আসেন দেবী যোগাদ্যা। তবে বছরে মাত্র এক বার বৈশাখী সংক্রান্তির দিনে তাঁর দেখা পান ভক্তেরা। সেই উপলক্ষে বুধবার থেকে মেলা শুরু হয়েছে মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামে। চলবে শনিবার পর্যন্ত। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার কয়েক হাজার মানুষের ঢল নেমেছে ক্ষীরগ্রামে।
কথিত আছে, দেবীর ৫১ পীঠের একটি পীঠ হল ক্ষীরগ্রাম। কিন্তু কোনও ভাবে হারিয়ে গিয়েছিল প্রাচীন যোগাদ্যা মূর্তিটি। তার পরে বর্ধমানের মহারাজা কীর্তি চন্দ যোগাদ্যার মন্দিরটি নির্মাণ করান গ্রামে। সম্ভবত তাঁরই আদেশে হারিয়়ে যাওয়া মূর্তির অনুকরণে দশভুজা মহিষমর্দিনীর একটি প্রস্তর প্রতিমা তৈরি করেন দাঁইহাটের নবীনচন্দ্র ভাস্কর। নতুন তৈরি হওয়া মূর্তিটি অবশ্য বছরের অন্যান্য সময়ে ডুবিয়ে রাখা হত ক্ষীরদিঘির জলেই। |
|
ক্ষীরগ্রামের মেলায় কাচের চুড়ির পসরা। —নিজস্ব চিত্র। |
কেবল ৩১ বৈশাখ জল থেকে তুলে এনে তা সর্বসমক্ষে রাখা হত। সেই ঐতিহ্য চলছে এথনও। সংক্রান্তিতে সারাদিন পূজিত হন দেবী। পুজো শেষে ভোররাতে দেবীকে ফের ক্ষীরদিঘিতে নামানো হয়। তবে বেশ কয়েক বছর আগে দিঘি থেকে দেবী প্রতিমা চুরি করেছিল দুষ্কৃতীরা। কাটোয়ার কাছে ভাটিগাছা মাঠে অবশ্য তা পাওয়া যায়। এর পরে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জলের তলাতেই একটি মন্দির গড়েন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীরা জানান, তাঁদের গ্রামে দেবী যোগাদ্যার পুজো হয় বলে আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে শারোদৎসবও হয় না। প্রচুর বন্দনা-কাহিনীও রয়েছে দেবীকে ঘিরে। লোক গবেষক যজ্ঞেশ্বর চৌধুরী জানান, এই জনপদে অন্তত ৪০টি যোগাদ্যার বন্দনা পুঁথি মিলেছে। তবে তাঁর মতে, সব থেকে আগে যোগাদ্যা বন্দনা লিখেছিলেন কবি কৃত্তিবাস। কবির মতে, রামায়ণের সময়ে মহীরাবণ বধের পরে ভদ্রকালী তথা যোগাদ্যাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেন রামচন্দ্র।
যে কোনও গ্রামীণ মেলার মতই এই মেলায় পুজোর দিন দূর-দূরান্ত গ্রাম থেকে দল বেঁধে মানুষজন দেবী দর্শন করতে আসেন ও পুজো দেন। কিন্তু এই গরমে দর্শনার্থীদের জন্য পানীয় জল অপ্রতুল ছিল, শৌচাগারও কম ছিল, সে কথা মেনে নিয়েছেন মেলা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত চৌধুরী ও সম্পাদক দেবদাস চৌধুরী। তাঁরা বলেন, “এ বছরই মেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। মেলায় বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। আশা করি, সামনের বছর সেই সব সমস্যা মেটাতে পারব।” |
|
|
|
|
|