অজয়ের বালি খুঁড়ে মিলল শতাব্দী প্রাচীন রেললাইন
ছর পাঁচেক আগেকার কথা। জল শুকিয়ে অজয়ের বুক ফুঁড়ে আচমকাই জেগে উঠেছিল রেল লাইনের কিছু অংশ। তবে তা নিয়ে খোঁজখবর করার আগেই আবারও জলের নীচেই চলে গিয়েছিল সেই রেল লাইনের ইতিহাস। মানুষজন ভেবেছিলেন ওই অতীত বোধহয় জলের নীচ থেকে আর উঠবে না। কিন্তু আবারও সেতুর কাজ চলাকালীন বালির নীচে দেখা মিলল রেল লাইনের।
বালির মধ্যে থেকে উঁকি দিচ্ছে রেললাইন। —নিজস্ব চিত্র।
বেশ কিছুদিন ধরেই কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার ডবল লাইন ও কাটোয়া-আমোদপুর ব্রডগেজ লাইন পাতার জন্য সেতুর কাজ চলছে অজয়ের উপর। সেখানেই সেতু থেকে কিছুটা দূরে বালি তোলার সময়ে কাঠের স্লিপার সমেত ওই রেল লাইনের দেখা মিলেছে। এলাকার ইতিহাস অনুসন্ধিৎসু মানুষজন মনে করছেন, অজয়ের বুকে এই রেল লাইনের সুলুক সন্ধান করলে অজয়ের গতিপথ সম্পর্কে অনেক তথ্য মিলবে। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের বেলাতেই লাইন থেকে কাঠের স্লিপার খুলে রেখে রাতের অন্ধকারে তা নিয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে। কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ইতিহাস খোঁজার কাজে ওই স্লিপারগুলি লাগতে পারে। রেলের উচিত নজর দেওয়া। তবে ওই সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্মী সুরেশ সাউ বলেন, “মাটি খোঁড়ার কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। মাটি খুঁড়তেই মিলছে রেল লাইন, কাঠের স্লিপার, পাথর, ইট।” তবে এই সমস্ত রেলের সম্পত্তি আলাদা করে রেখে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতু থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত রেলের জায়গা। সেখানে লাইন মিললে নিশ্চয় গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত এক রেলকর্মী বলেন, “অজয়ের চরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রেল লাইন বিছানো রয়েছে। ৫-৬ ফুট বালি কাটলেই তা উপরে আসছে। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে বাকি জায়গায় কথা জানানো হয়নি।”
অজয়ের দুই পাড়ের কাটোয়ার গোয়াই ও কেতুগ্রামের কাঁকুরহাটি গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে অবশ্য কিছুটা জানা গিয়েছে। গ্রামের প্রবীণেরা জানান, ১৯০৪ সাল নাগাদ এই সেতুটির কাজ শুরু হয়। চলে ১৯১০ সাল পর্যন্ত। কাজটি করেছিল ডরম্যান লং কোম্পানি লিমিটেড (কনস্ট্রাকশন নম্বর-৩০৯০)। সেতু তৈরির মালপত্র ওঠানামা করার কাজে ব্যবহারের জন্য রেলপথটি বানানো হয়েছিল। সেতুর স্তম্ভ বানানোর সময় এই রেলপথ দিয়ে ভাটা থেকে ইট নিয়ে যাওয়া হত বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। তবে মাঝ অজয়ে রেল লাইন কেন পাতা হয়েছিল সে উত্তর অবশ্য গ্রামবাসীদের অজানা।
কাটোয়ার ইতিহাস অনুসন্ধিৎসু প্রবীর আচার্য, স্বপন ঠাকুররা মনে করেন, ওই ইতিহাস জানা গেলে অজয়ের গতিপথ বদল হয়েছিল কিনা তা জানা যাবে। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও এই ইতিহাস খুঁজে বের করতে উদ্যোগী হয়েছেন। হাওড়ার ডিআরএম ও রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতরকে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.