নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
উৎপাদনবিহীন একটি কয়লা খনির বেশ কয়েকজন শ্রমিক-কর্মীকে অন্যত্র বদলি করায় বুধবার ইসিএলের শ্রীপুর এরিয়ার কুশাডাঙা কোলিয়ারিতে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিক-কর্মীরা। বিক্ষোভের জেরে দফতরে ঢুকতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বদলির নির্দেশ জারি করে কোলিয়ারি বন্ধের চক্রান্ত করছেন কর্তৃপক্ষ। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, নিরাপত্তাজনিত কারণে খনির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। পুনরায় উৎপাদন চালু না হওয়া পর্যন্ত এখানকার শ্রমিকদের পাশের খনিগুলিতে কাজ করতে পাঠানো হচ্ছে।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই খনিটি প্রায় ২৩ বছরের পুরনো। ২০১২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ভূগর্ভস্থ এই খনিতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ১৯৮৯ সালে স্থানীয় গিরমিট কোলিয়ারিতে আগুন লাগে। নিরাপত্তার কারণে ওই খনির উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে সেখানকার শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে কুশাডাঙার ভূগর্ভস্থ খনিটি চালু করা হয়। ২০১২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কুশাডাঙার খনিতে রাতের শিফ্টে কাজ চলার সময়ে খনির বেশ কিছুটা অংশের চাল ধসে যায়। সেদিন থেকেই এখানকার উৎপাদন বন্ধ। ডিরেক্টর জেনারেল মাইনস সেফটি (ডিজিএমএস)-র একটি বিশেষজ্ঞ দল খনিটি পরীক্ষা করে জানায়, খনির চাল খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে। যে কোনও সময়ে ধসে যেতে পারে। এই অবস্থায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে খনির চাল ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পরেই চালু হতে পারে উৎপাদন। |
মঙ্গলবার বিকেলে কর্তৃপক্ষের তরফে ১৩৬ জন শ্রমিকের নামের তালিকা সংবলিত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাঁদের বদলির নির্দেশ জানানো হয়। এরপরই বিক্ষোভ শুরু হয়। বুধবার সকাল থেকে অবস্থা চরমে ওঠে। বিক্ষোভের জেরে দফতরে ঢুকতে পারেননি খনির ম্যানেজার থেকে এজেন্টরা। সিটুর খনি শাখার সম্পাদক বিবেক ঘোষালের অভিযোগ, আট মাস পেরিয়ে গেলেও খনির চাল ধরে রাখার মতো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। তাঁর দাবি, “ধীরে ধীরে শ্রমিক কর্মীদের বদলি করে এই খনিটি বন্ধ করতে চান কর্তৃপক্ষ। আইএনটিইউসির খনি শাখার সম্পাদক মোজাফর সাগা বলেন, “শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই কর্তৃপক্ষ একতরফা সিদ্ধান্তে বদলির নির্দেশ জারি করেছে।” এ দিন সব ক’টি শ্রমিক সংগঠনই অবস্থান বিক্ষোভে যোগ দেয়।
খনির এজেন্ট আরআর গোস্বামী জানান, প্রায় আট মাস ধরে খনির উৎপাদন বন্ধ। অথচ শ্রমিকের অভাবে উৎপাদন মার খাচ্ছে খনিতে। এই জন্য এখানকার শ্রমিকদের ওই সব খনিতে কাজ করার জন্য বদলি করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এই খনির উৎপাদন শুরু হলে তাঁদের আবার ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।” এজেন্ট আরও জানান, খনির চাল ধরে রাখার জন্য উন্নত কারিগরি প্রযুক্তি চেয়ে দরপত্র ডাকা হয়েছে। তিনটি সংস্থা ইতিমধ্যেই এসেছে। তাঁদের মধ্যে একটি সংস্থাকে বরাতও দেওয়া হয়েছে। কিছু কারিগরি সমস্যায় এখনও কাজ শুরু হয়নি। তবে অতি দ্রুত কাজ শুরু হবে। |