কেএলও জঙ্গি মালখান সিংহ ওরফে মাধব মন্ডল মালদহের হবিবপুর ও বামনগোলা এলাকায় ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী, শিক্ষকদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে মালখানের দলবল টাকা আদায়ের চেষ্টা শুরু করেছে বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে। এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মে মাস অবধি ৩ জন হবিবপুর থানায় মালখান সিংহের নামে তোলাবাজি এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে মালখান সিংহ ধরতে জেলা পুলিশের বিশাল বাহিনী হবিপুর ও বামনগোলার বিভিন্ন এলাকায় হানা দেয়। কিন্তু মালখান সিংহকে ধরতে না পারলেও পুলিশ তাঁর এক সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে। পরিস্থিতি বুঝে এলাকায় চারটি পুলিশ ক্যাম্প বসিয়েছে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মালখান সিংহের বিরুদ্ধে তোলাবাজির কিছু অভিযোগ এসেছে। অনেকেই অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছেন। তল্লাশি শুরু করেছি।” পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মালখান সিংহের বিরুদ্ধে হবিবপুর, বামনগোলা থানায় খুন তোলাবাজি, ছিনতাইয়ের মোট তেরোটি পুরানো মামলা আছে।
এই কেএলও জঙ্গির সক্রিয় হয়ে ওঠার খবর পৌঁছেছে রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর কাছেও। মন্ত্রী বলেন, “মালখান সিংহ-র তোলবাজি, হুমকির খবর পেয়েছি। পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” পুলিশ সূত্রের খবর, মালখান সিংহ একাধিক বার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। বেশ কয়েক বার জেলও খেটেছে। ২০০০ সালে বামনগোলায় ডিওয়াইএফ নেতা খুনের অভিযোগে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। দেড় বছর আগে জামিনে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই মালখান অসমে পালিয়ে যায় বলে পুলিশ জানতে পারে। চলতি বছরের গোড়াতেই ফের বামনগোলা এবং হবিবপুরে মালখান সক্রিয় হয়ে ওঠে। ব্যবসায়ীদের ফোন করে, স্কুল শিক্ষকদের রাস্তায় আটকে, সরকারি কর্মীদের চিঠি পাঠিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা শুরু করে মালখান। ১ জানুয়ারি স্থানীয় হবিবপুর থানায় তার বিরুদ্ধে প্রথম তোলাবাজির অভিযোগ জমা পড়ে। পুলিশ প্রথমে মালখানের নাম করে কোনও দুষ্কৃতী এই কাজ করছে বলে বিষয়টি জানায়। তার পরে ৩ ফেব্রুয়ারি ফের হবিবপুরে আরেকটি অভিযোগ দায়ের হয়। গত ১০ মে দুটি বাইক ছিনতাই করার অভিযোগ আসে মালখান সিংহের বিরুদ্ধে। তার পরেই জেলা পুলিশ নড়েচড়ে বসে।
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্স সম্পাদক উজ্জল সাহা বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা দাবি করছে মালখান। বামনগোলা আর হবিবপুরে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এমন চললে আমাদের ব্যবসা বন্ধের রাস্তায় হাঁটতে হবে।” হবিবপুরে একটি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, প্রায়ই মালখান সিংহের দলবল বাইক নিয়ে স্কুলে ঢুকছে। শিক্ষকদের ভয় দেখিয়ে মাসে ৫-৬ হাজার টাকা দাবি করছে।” |