একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কালিয়াচকের নওদা যদুপুর শাখা থেকে মালদহ প্রধান শাখায় টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ব্যাঙ্ক কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মারধর করে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছে ছয় দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ কালিয়াচক থানার নওদা যদুপুর পেট্রল পাম্পের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ঘটনা। পুলিশ জানায়, লুঠের একঘণ্টা পর পুলিশ নিচাকাঁদি গ্রামের একটি আমবাগান থেকে টাকার ভাঙা ট্রাঙ্কটি উদ্ধার করে। তবে পুলিশের সতর্কবার্তা থাকার পরেও থানা না জানিয়ে বা নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কেন টাকা পাঠানো হচ্ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “টাকার ভাঙা ট্রাঙ্কটি উদ্ধার হয়েছে। দুষ্কৃতীরা পালানোর সময় একটি পাইপগান ফেলে রেখে যায়। সেটিও উদ্ধার হয়েঠছে। যে গাড়িতে টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তার চালক এবং ব্যাঙ্ক কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” পুলিশ সুপার জানান, তিনটি বাইক নিয়ে ছ’জন দুষ্কৃতী এসেছিল বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু হয়েছে। |
পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি মানিচকের ভুতনির একই ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ২০ লক্ষ টাকা মালদহ প্রধান শাখার আনার পথে একইভাবে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা লুঠ হয়েছিল। ঘটনার পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলার সমস্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারদের সর্তক করা হয়। টাকা পাঠানোর আগে স্থানীয় থানায় জানানো ছাড়াও নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়। কিন্তু এ দিন ওই শাখার ম্যানেজার তা কেন করেননি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনার পরেই ব্যাঙ্কের উচ্চ পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। ব্যাঙ্কের চিফ রিজিওনাল ম্যানেজার সঞ্জয় রায় বলেন, “পুলিশকে সব জানানো হয়েছে। এ দিন পুলিশকে আগাম কেন শাখার ম্যানেজার টাকা নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাননি তা দেখা হচ্ছে।” আর ব্যাঙ্কের ওই শাকার ম্যানেজার নবীন কুমার বলেন, “এর আগেও এই ভাবে টাকা পাঠানো হয়েছিল। তাই এদিন আর কিছু জানানো হয়নি।”
এ দিন দুপুর আড়াইটা নাগাদ নওদা যদুপুর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কালিয়াচক থেকে একটি ট্যাক্সি ভাড়া নেন। সেই ট্রাক্সির ডিকিতে ট্রাঙ্কভর্তি ২০ লক্ষ নিয়ে ব্যাঙ্কের হেডক্যাশিয়ার সুভাষ চন্দ্র রায় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী গণেশ চন্দ্র ঘোষ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে মালদহের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পুলিশ জানিয়েছে, মাত্র দেড় কিলোমিটার যেতেই একটি বাইকে দু’জন এসে ট্রাক্সটিকে আটকে লুঠপাট চালায়। হেড ক্যাশিয়ার সুভাষবাবু বলেন, “বাইক থেকে একজন নেমে পাইপগান দিয়ে ট্যাক্সির সামনের কাঁচ ভেঙে চালকের মাথায় পাইপগান ধরে। পাশ থেকে আরও দুটি বাইকে চারজন আমার ও সহকর্মীর মাথায় পাইপগান ঠেকিয়ে ট্রাঙ্কের চাবি চায়। চাবি দিতে দেরি করায় আমাকে মারধর করে।” অপর কর্মী গনেশবাবু বলেন, “তিনটি বাইকে মোট ছয়জন ছিল। প্রত্যেকের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। শাবল দিয়ে ট্যাক্সির ডিকি ভেঙে টাকা ভর্তি ট্রাঙ্কটি নামিয়ে সেটি বাইকে তুলে লাগোয়া আমবাগানের দিকে পালিয়ে যায়।” ঘটনার সময় অনেক গাড়ি রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করলেও কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি বলে ওই দুই ব্যাঙ্ক কর্মী জানিয়েছেন। |