ফের নাবালিকার বিয়ে আটকাল পুলিশ। এ বার ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার। এ ক্ষেত্রে পুলিশ নিজেই মামলা দায়ের করে বিয়ে আটকে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার হাবরা থানায় খবর পৌঁছয় যে কামারথুবা এলাকায় বছর পনেরোর এক কিশোরীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশ ঘটা করেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। নিমন্ত্রিতের সংখ্যাও কম ছিল না, প্রায় দেড়শো। এ দিন পুরোহিত সবে মন্ত্র পাঠ সেষ করেছেন। কনের সিঁদুর দান পর্বও শেষ। বিয়ের পর্ব চুকতে সামান্যই বাকি ছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বাড়িতে হাজির হল পুলিশ। বিয়েবাড়িতে হঠাৎ পুলিশ দেখে সকলেই অবাক। যদিও একটু পরেই জানা গেল সব। নাবালিকা বিয়ের অপরাধে পুলিশ গ্রেফতার করে পা ত্র লিটন মিস্ত্রী, কনের মা গীতা দেবনাথ ও পাত্রের মামা সুভাষ সরকারকে। কনেকেও উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগরের এজি কলোনির বাসিন্দা লিটনের সঙ্গে কামারথুবার সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। পাত্রীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বাবা ভ্যাচালক। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। যে অসুস্থ,চিকিৎসা চলছে। এই অবস্থায় মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারবেন ভেবেই মেয়ের বিয়ে ঠিক করে বাবা-মা। পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য, আঠারো বয়সের নীচে যে মেয়ের বিয়ে দেওয়া আইনবিরুদ্ধ তা তাঁরা জানতেন না।
হাবরা থানার আইসি অনিল রায় বলেন, “নাবালিকার বিয়ে দেওয়া বা তাকে বিয়ে করা অপরাধ। এ ক্ষেত্রে তাই পুলিশ নিজেই উদ্যোগী হয়ে মামলা রুজু করেছে। অভিযুক্তদেরও গ্রফতার করা হয়েছে। যাতে সমাজের মানুষ সচেতন হন।”
স্থানীয় বিধায়ক ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “পুলিশ এ ক্ষেত্রে যে ভূমিকা পালন করেছে তা প্রশংসার। ভবিষ্যতে শুধু হাবরাই নয়, অন্য কোথাও যাতে নাবালিকা বিয়ে না হয় সে জন্য প্রচার চালিয়ে মানুষকে সচেতন করা হবে।”
ধৃতদের মঙ্গলবার বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক তিনজনকে জামিনে মুক্তি দেন। এবং কিশোরীকে তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে যাতে আর কখনও নাবালিকার বিয়ে না দেন সে জন্য বাবাকে সতর্ক করে দেন বিচারক। |