তৃণমূল পরিচালিত উত্তর ২৪ পরগনার অশোকগড়-কল্যাণগড় পুরসভার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামল বামেরা। বারো দফা দাবিতে মঙ্গলবার থেকে এই আন্দোলন শুরু করেছে তারা। এ দিন বামেদের তরফে পুরসভায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। প্রতিবাদ সভার পাশপাশি অবস্থান বিক্ষোভ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের অশোকনগর লোকাল কমিটির সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক সত্যসেবী কর, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাবুল কর, চিত্ত বসু প্রমুখ।
বামেদের তরফে অভিযোগ, পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে যে কমিউনিটি হল তৈরি হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। কোথাও শুধুমাত্র গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে, কোথাও ফেলা হয়েছে ইট বালি। |
সিপিএমের দাবি, ওই সমস্ত প্রকল্পে কত টাকা বরাদ্দ হয়েছিল তা পুরবাসীকে জানাতে হবে। বাম আমলের মতো প্রজ্ঞানন্দ সেবা সদন হাসপাতালে সম্পূর্ণ পরিষেবা ফের চালু করতে হবে। ছোট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপর করের বোঝা কমাতে হবে। প্রয়াগের সঙ্গে পুরসভার কি চুক্তি হয়েছিল তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। ৪০০ কোটি টাকার জল প্রকল্পের বর্তমানে কী অবস্থা তা পুরসভাকে জানাতে হবে। সত্যসেবী কর বলেন, “গত তিন বছরে এই পুরসভা নাগরিকদের পরিষেবা ও আর্থিক উন্নয়নের দিকে নজর দেয়নি। তার চেয়ে তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল এলাকার সৌন্দর্য্যায়ন। আর তা করতে গিয়ে নিজেদের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। আর্থিক দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে।”
পুরসভার তরফে অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টিতে কমিউনিটি হল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। ওই প্রকল্পে অর্থ দিয়েছে রাজ্য। কাজ করছে মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টর (এমইডি)। তা ছাড়া এই পুরবোর্ড ছোট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপর করের বাড়তি বোঝা চাপায়নি। বরং কেউ কর মকুবের আবেদন করলে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর মকুব করা হয়। বাম আমলে প্রজ্ঞানন্দ সেবা সদন সিপিএমের পার্টি অফিস ছিল। সেখানে এখন রোজ ১০০-১৫০ মানুষ বিনা পয়সায় চিকিৎসা পরিষেবা পান। জল প্রকল্প নিয়ে পুরসভা জানিয়েছে, কেন্দ্র জল প্রকল্প অনুমোদন করলেও অর্থ বরাদ্দ করেনি। প্রয়াগের সঙ্গেও তাদের কোনও চুক্তি হয়নি। তারা বিদ্যাধরী খাল সংস্কার করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি।
পুর চেয়ারম্যান তৃণমূলের সমীর দত্ত বলেন, “আমাদের উন্নয়নের কাজকর্ম দেখে বামেদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাই মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই মিথ্যা অভিযোগ করছে।” |