উৎসবের আবহে নতুন অঙ্ক, জেতো রান রেট বাড়িয়ে
চিন্নাস্বামীতে তখন সবে চেতেশ্বর পূজারার উইকেটটা পড়েছে। নাইটদের টিম বাস রাঁচি স্টেডিয়াম চত্বরে ঢোকেনি। প্রায় ফাঁকা মাঠে প্র্যাক্টিসে ব্যস্ত অ্যালান ডোনাল্ডদের পুণে ওয়ারিয়র্স।
“বাকি ম্যাচে কে জিতল, কে হারল সে সব নিয়ে আমরা ভাবছি না। কোনও দিনই ভাবি না। আমরা সবাই পেশাদার ক্রিকেটার। আমাদের লক্ষ্য শুধু নিজেদের সেরাটা দিয়ে যাওয়া।” বক্তা আর কেউ নন, নাইট অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। নাইট ক্যাপ্টেন যখন সাংবাদিক সম্মেলনে সেই বাঁধা বুলি বলে যাচ্ছেন, গেইলরা তখন পাওয়ার প্লে-র শেষে ৩১-১।
আর চার ওভার পরও চুপচাপ গেইলের ব্যাট। আরসিবি ৫২-১। এক একটা সোনালি বেগুনি জার্সি তখন ঝাঁ-ঝাঁ রোদ্দুর মাথায় প্র্যাক্টিসে নামছে। নাইট শিবিরে তখন আশার হাতছানি। গেইলকে যদি আজও আটকানো যায়, তা হলে...
মনপ্রীত গোনির ওভারে পরপর তিন বলে গেইলের তিনটে ছক্কা উড়ে গেল চিন্নাস্বামীর গ্যালারিতে। গম্ভীরের কাছে নিশ্চয়ই ড্রেসিংরুম থেকে খবর পৌঁছেছিল, না হলে আর কেকেআর ক্যাপ্টেনের মুখ দেখে কেন একটাই শব্দ মনে আসবে গুরুগম্ভীর!

রাঁচিতে নাইটদের প্র্যাক্টিস। ছবি: পিটিআই
কয়েক ওভার পরে গেইল বোল্ড। নাইট অধিনায়ক তখন কোচ ট্রেভর বেলিসের সঙ্গে আলোচনায় ডুবে।
শেষ দশ ওভারে আরসিবি তুলল ১২৩। পঞ্জাবের সামনে টার্গেট যথেষ্ট কঠিন ১৭৬। নাইটরা একে একে মাঠ ছেড়ে ঢুকছেন ড্রেসিংরুমে। পঞ্জাব ইনিংসটা দেখতে হবে তো! নাইট অধিনায়ক কিন্তু তখনও মাঠে। পেশাদারি ক্রিকেট দুনিয়ায় জেতা-হারা বা টুর্নামেন্টে টিকে থাকা-না থাকা নিয়ে আবেগের জায়গা নেই। অন্য ম্যাচে ফল যা-ই হোক, জার্সি পরে সেই মাঠে নামতেই হবে, খেলতে হবে শেষ দুটো ম্যাচ।
ম্যাচের শেষ ৬০ বলে অ্যাডাম গিলক্রিস্টদের চাই ৯৭। নাইট শিবিরে একটু একটু করে স্বস্তির হাওয়া। মনে হচ্ছে, হয়ে যাবে। আর গম্ভীর? তখনও একমনে বেলিসের ছোড়া বলে নকিং করে যাচ্ছেন। একটু পরে তিনিও ড্রেসিংরুমের রাস্তায়। টিভির সামনে গোটা নাইট রাইডার্স টিমের প্রার্থনা কী, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সন্ধের দিকে এক নাইট যেমন বলছিলেন, “আমরা সবাই পঞ্জাবের জন্য চিয়ার করছিলাম। এ রকম দিন টুর্নামেন্টে আগে কোনও দিন আসেনি। ভাগ্যিস ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শুনলেন!”


ক্রিকেট ঈশ্বর বোধহয় নাইটদের প্রার্থনায় গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় একটু বেশিই কান দিচ্ছেন। না হলে পরপর দুটো ম্যাচের স্কোরকার্ড নাইটদের স্বপ্ন থেকে বাস্তবের মাটিতে নেমে আসে? না হলে ঘরের মাঠে জাহির, মুরলীধরনদের খেলিয়েও ১৭৫ অক্ষত রাখতে পারে না আরসিবি? না হলে বেছে বেছে আজকের দিনই ৫৪ বলে অপরাজিত ৮৫ করে দেন ‘বুড়ো’ গিলক্রিস্ট? সোমবার রাতে নাইটদের পরিত্রাতা হয়ে দেখা দিয়েছিলেন মুম্বইয়ের কায়রন পোলার্ড। আর আজ নাইটদের ‘নাইট ইন শাইনিং আর্মার’ অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
সবই তো হল। কিন্তু এ বার যে নিজেদের কাজটাও করে দেখাতে হবে গম্ভীরদের। পাড়া-প্রতিবেশীরা কে কী করল না করল, সে সব না দেখে শেষ দুটো ম্যাচ জিততেই হবে। না হলে এত কষ্ট করে বাঁচিয়ে রাখা প্লে-অফের স্বপ্ন এ বারের মতো শেষ। এ দিন যে চিন্নাস্বামীতে জিতে পঞ্জাব আইপিএল টেবিলে ছ’য়ে উঠে এল। নাইটরা ফের সেই সাতে। রানরেটও শোচনীয়। শেষ দুটো ম্যাচ তাই শুধু জিতলেই হবে না, রানরেট মাইনাস থেকে প্লাসে আনাও দরকার। ডেল স্টেইনদের ডেরায় গিয়ে পড়ার আগে লিগ টেবিলের তলানিতে থাকা পুণে-র বিরুদ্ধে কাজ এগিয়ে রাখাটা সহজ রাস্তা, কিন্তু রাঁচির উইকেটের গোলকধাঁধায় পথ হারাবেন না তো নাইটরা?




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.