অ্যাডাম গিলক্রিস্টের অবিশ্বাস্য ইনিংসটা মঙ্গলবার দেখতে দেখতে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়ছিলাম। আমি নিজে গিলির বিরাট ভক্ত। ক্রিকেট খেলতাম যখন, গিলিই আদর্শ ছিল। আজও ও ব্যাট হাতে নামলে প্রার্থনা করি, পুরনো গিলিকে যেন দেখতে পাই। চল্লিশ বছর বয়সে সেটা সব সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু গিলক্রিস্টের মধ্যে খিদেটা যে এখনও ভাল রকম আছে, বুঝেছিলাম কয়েক দিন আগে। পুণে-র সঙ্গে ম্যাচ ছিল কিংস ইলেভেনের। গিলি-র সঙ্গে কথা বলছিলাম। ও বলল, এটাই ওর শেষ আইপিএল। এ বারের টুর্নামেন্টটা ও স্রেফ উপভোগ করতে চায়। করে যেতে চায় এমন কিছু যাতে লোকে অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে মনে রাখে!
ভাবিনি, মঙ্গলবার আরসিবির কপালেই দুর্ভোগটা থাকবে। কী টিম ভাবুন তো বেঙ্গালুরু। গেইল, কোহলি, ডে’ভিলিয়ার্সে মতো দুর্ধর্ষ সব ক্রিকেটার ওদের টিমে। অরেঞ্জ ক্যাপের দৌড়ে প্রথম তিনের মধ্যে ওদেরই দু’জন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোহলিদের প্লে অফে ওঠা কঠিন করে দিল গিলি একাই। নাহ্, একা বললে ভুল হবে। বিশ্বের সর্বকালের সেরা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান আজ হয়তো এই ইনিংসটা খেলতেই পারত না, উল্টো দিকে আজহার মেহমুদ না থাকলে। |
ওস্তাদের মার...
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। ৫৪ বলে ৮৫ নট আউট
বিস্তারিত স্কোর... |
যে কোনও উইকেটেই ১৭৫ রান খারাপ টার্গেট নয়। বরং বেশ কঠিন। অনেকে বলবেন, আরসিবির রানটা আরও কুড়ি-পঁচিশ উঠলে গিলিও কিছু করতে পারত না। আরসিবি-র প্রথম দশ ওভারে রান তো কিছুই ওঠেনি। গেইলের মতো ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যানও কিছু করতে পারছিল না। পরে ওকে চেনা গেল। আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে, চিন্নাস্বামীর উইকেটে প্রথম পাঁচ-ছ’ওভার ব্যাট করা খুব কঠিন ছিল আজ। বল মুভ করেছে। হঠাৎ-হঠাৎ নীচু হয়েছে। যেটা পরের দিকে আর হয়নি। জাহির খান, মুরলীধরনদের মাঝারি মানের বোলিং কাজ আরও সহজ করে দিয়েছিল গিলির। শুরুর দিকে ওকেই খুব একটা সচ্ছ্বন্দ দেখাচ্ছিল না। কিন্তু উল্টো দিক থেকে আজহার এমন মারা চালু করে দিল যে, চাপটা গিলির উপর নয়, পুরোটাই পড়ল গিয়ে বেঙ্গালুরু বোলিংয়ের উপর। গিলির মতো আজহারকে দেখেও অবাকই লাগে। এত বয়স। বিশ্ব ঘুরে-ঘুরে শুধু টি টোয়েন্টি খেলে বেড়ায়। কিন্তু এখনও ‘পাওয়ার হিটিং’-এ টি-টোয়েন্টির তাবড় তাবড় ক্রিকেটারদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।
|
প্রথম তিনে দুই তবু দল সঙ্কটে |
১
ক্রিস গেইল ৬৮০ রান |
৩
বিরাট কোহলি ৫৭৮ রান |
|
|
লিগ টেবলের অবস্থা যা দেখছি, তাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, চেন্নাই সুপার কিংস আর রাজস্থান রয়্যালস মোটামুটি প্লে অফ যাচ্ছেই। যাবতীয় অঙ্ক এখন চার নম্বর জায়গাটা নিয়ে। লড়াইয়ে আবার চারটে টিম। আরসিবি। সানরাইজার্স। কেকেআর এবং কিংস ইলেভেন। কেউ কেউ বলছেন, আরসিবি আর পারবে না। একটা ম্যাচ বাকি। সেটাও আবার চেন্নাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু আমি আশা ছাড়ছি না। গেইলের ব্যাটে ঠিকঠাক লাগলে চেন্নাই কেন, যে কোনও টিমই স্রেফ উড়ে যাবে। এখন পরিস্থিতি যা, তাতে সানরাইজার্সের অবস্থা সবচেয়ে ভাল। ঘরের মাঠে ওদের শেষ দু’টো ম্যাচ।
আর কেকেআর? সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ওদের শুধু জিতলেই চলবে না। আবার অন্যদের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে। তা ছাড়া বুধবার আমাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ। একটা কথা বলে রাখি, আমরা এই দু’টো ম্যাচে চেষ্টা করব টিমের সম্মানটা রাখতে। পুণে টিমটা খারাপ নয়। আমরা পারছি না আসলে শেষ পাঁচ-ছ’ওভারে। কী ব্যাটিংয়ে, কী বোলিংয়ে। ওখানেই বাকিরা আমাদের মেরে দিচ্ছে। যা-ই হোক, রাঁচির উইকেটটা দেখলাম। বেঙ্গালুরু-কেকেআর ম্যাচে পিচের যা অবস্থা হয়েছিল, এই ম্যাচে সেটা হবে বলে মনে হয় না। উইকেটটা ভালই লাগল। পাওয়ার হিটার আমাদের টিমেও আছে। কেকেআর জিতেই গিয়েছে, এ রকম ধরে নেওয়ার তাই কোনও কারণ নেই। আমরা কিন্তু কলকাতার উৎসব নষ্ট করার টার্গেট নিয়েই নামব। |