এক দিকে বিভিন্ন রুটে সরকারি বাস কমছে। অন্য দিকে, বাস-মিনি-অটোয় পারমিট নিতে যথেষ্ট আগ্রহীর অভাব। এই অবস্থায় এক লপ্তে চার হাজার ট্যাক্সি নামাতে চায় রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে মহাকরণে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বিভাগীয় পদস্থ অফিসার এবং কলকাতা সংলগ্ন চার জেলার প্রশাসকদের সঙ্গে সবিস্তার আলোচনা করেন।
মহানগরীতে ট্যাক্সির সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। এর প্রায় ৭০ শতাংশ বেলতলার পিভিডি-তে নথিভুক্ত। বাকিগুলির পারমিট দেওয়া হয়েছে হাওড়া, আলিপুর, ব্যারাকপুর এবং বারাসত এই চার আঞ্চলিক পরিবহণ বিভাগ (আরটিও) থেকে। এগুলির সিংহভাগই পুরনো। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, যে চার হাজার নয়া ট্যাক্সি নামানো হবে, প্রতিটি হবে নতুন। পিভিডি-র ভাইস চেয়ারম্যান সব্যসাচী বাগচী বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে দূষণ-নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় এই সব ট্যাক্সির প্রতিটিতে থাকবে ‘ভারত স্টেজ ফোর’ ইঞ্জিন। এগুলির অন্তত এক হাজার হবে শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত।” এখন শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত ট্যাক্সির সংখ্যা কমবেশি ৪৫০। পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “এগুলির ভাড়া সাধারণ ট্যাক্সির চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এখন অনেকেই আরামদায়ক যান চান। ট্যাক্সির নয়া পারমিটে এঁদের কথা মাথায় রাখা হচ্ছে।”
দেশের বড় শহরগুলিতে বিএস ফোর ইঞ্জিনের ট্যাক্সি অনেক আগে নামলেও কলকাতায় তা হাতে গোনা। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন এই হাল? পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “ট্যাক্সির নির্মাতা সংস্থা এ রকম গাড়ি অত দ্রুত তৈরি করতে পারছে না। ফলে, ১৫ বছরের পুরনো ট্যাক্সি যাঁরা বদলাচ্ছেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করে সরকার আগামী ২৭ মে পর্যন্ত তাঁদের ‘বিএস থ্রি’ ইঞ্জিনের ট্যাক্সি নামানোর অনুমতি দিচ্ছে। তা হলে নয়া পারমিটে চার হাজার ‘বিএস ফোর’ ইঞ্জিনের ট্যাক্সি পাবেন কী ভাবে? সব্যসাচী বাগচীর জবাব, “নির্দিষ্ট একটি নয়, অন্য প্রস্তুতকারকদের গাড়িও ট্যাক্সি হিসেবে নামানো হবে। আগামী শুক্রবার তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরিবহণ-কর্তাদের মহাকরণে এক প্রস্থ বৈঠক হবে।”
ট্যাক্সির ব্যাপারে বাম সরকারের শেষ বিজ্ঞপ্তিতে অতি-পরিচিত মডেল ছাড়াও পরিবহণ দফতর অপর একটি প্রস্তুতকারক সংস্থার নির্দিষ্ট দু’টি মডেলের ছাড়পত্র দিয়েছিল। ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি বিমল গুহ বলেন, “আমাদের কাছে অপর দু’টি মডেলের গাড়ি ট্যাক্সি হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। এ কারণেই ‘বিএস থ্রি’ ইঞ্জিনের অতি-পরিচিত মডেলের ট্যাক্সি নামানোর বিশেষ অনুমতি পেয়েছিলাম।” প্রস্তুতকারকেরা ট্যাক্সির উপযোগী অন্য মডেলের কী রকম গাড়ি নামায়, তার উপরে নজর রাখা হচ্ছে বলে বিমলবাবু মন্তব্য করেন। |