কমিশনে রেকর্ড নালিশ
পেটে ব্যথা, বুক ধড়ফড়, সুদীপ্তর পরীক্ষা পিজিতে
সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের শরীর খারাপ। তাই মঙ্গলবার সকালে তদন্তকারী অফিসারেরা তাঁকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন।
সোমবার রাতে নিউ টাউন থানায় মেডিক্যাল চেক-আপ বা স্বাস্থ্যপরীক্ষার সময় সুদীপ্ত জানান, তাঁর অস্বস্তি হচ্ছে এবং শরীর খারাপ লাগছে। তার পরেই চিকিৎসক আলট্রা-সোনোগ্রাফি, ইসিজি ও রক্তপরীক্ষার জন্য তাঁকে পিজি-তে পাঠানোর সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশ অনুযায়ী এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ পুলিশ নিউ টাউন থানা থেকে সুদীপ্তকে এসএসকেএমে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে প্রথমে তাঁকে মেডিসিন এবং পরে কার্ডিওলজির বহির্বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, সুদীপ্ত তাঁদের বলেন, তাঁর পেটে ব্যথা হচ্ছে, বুক ধড়ফড় করছে এবং বেশির ভাগ সময়েই গা গুলিয়ে উঠছে। তিন জন চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করেন। ইসিজি, বুকের এক্স-রে এবং বেশ কয়েক ধরনের রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। কয়েকটি ওষুধ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বেশি করে জল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁকে। এসএসকেএমের সুপার তমালকান্তি ঘোষ বলেন, “পরীক্ষানিরীক্ষার পরে ভর্তি রাখার মতো কোনও অসুস্থতা পাওয়া যায়নি। তাই বহির্বিভাগ থেকেই ডাক্তারেরা ওঁকে ছেড়ে দেন।” সকালে বহির্বিভাগে এমনিতেই উপচে পড়া ভিড় থাকে। তার উপরে সুদীপ্ত সেনকে দেখতে অন্যান্য বিভাগের রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়েরাও ভিড় করেন। শুরু হয়ে যায় ধাক্কাধাক্কি।
বেলা আড়াইটে নাগাদ সুদীপ্তকে নিউ টাউন থানায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নিউ টাউন থানার সামনে সাংবাদিকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, কেমন আছেন? উত্তরে তিনি বলেন, “একটু শরীর খারাপ হয়েছিল। এখন ভাল আছি। আপনারা কেমন আছেন?” এর পরেই তাঁকে থানার ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে সুদীপ্তের পাওনা টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার ব্যবস্থাও হয়েছে। সারদা গোষ্ঠীর বাজেয়াপ্ত করা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের মধ্যে কয়েকটিতে টাকা জমা দেওয়ার সুবিধা চালু করার জন্য বিধাননগর আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। বিচারক এ দিন সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। সুদীপ্তের আইনজীবী সমীর দাস জানান, কয়েক মাস আগে তাঁর মক্কেল কয়েকটি দামি যন্ত্রপাতি বিক্রি করেছিলেন। তার টাকা তিনি পাননি। ওই অ্যাকাউন্টে সেই টাকা জমা পড়লে তাঁর মক্কেলের কিছু আয় হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। সমীরবাবু বলেন, “আদালত সারদার ছ’টি অ্যাকাউন্টে এই সুবিধা চালু করতে বলেছে। তবে ওই সব অ্যাকাউন্টে আপাতত শুধু টাকা জমা দেওয়া যাবে। টাকা তোলা যাবে না।”
সারদা গোষ্ঠীর কাছ থেকে তাঁদের পাওনা আদায়ের জন্য এ দিনও নিউ টাউনের শ্যামল সেন তদন্ত কমিশনে আমানতকারীর ভিড় উপচে পড়ে। গত সোমবার ওই কমিশনে অভিযোগ জমা পড়েছিল ৩৮ হাজার ৫০০টি। মঙ্গলবার সেই রেকর্ড ভেঙে ৫০ হাজার ৫১০টি অভিযোগপত্র জমা পড়ে। এ দিন বেলা ৩টে পর্যন্ত মোট ৪৫টি কাউন্টারে অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হয়। কমিশন সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি অফিসে এ দিন জমা পড়েছে ১৯৫০টি অভিযোগপত্র।
সারদার অন্যতম কর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের বোন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে এ দিন বিকেলে কমিশনারেটে আসেন দেবযানীর আইনজীবী অভিষেক মুখোপাধ্যায়। তাঁরা গোয়েন্দা-প্রধানের সঙ্গে দেখা করেন। পুলিশি সূত্রের খবর, সারদা গোষ্ঠীর শিলিগুড়ি স্কুলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অর্পিতাকে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই স্কুলের এক প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.