|
|
|
|
নীললোহিতের সঙ্গে পুজোয় |
শারদীয়া সংখ্যায় নয়। পুজোমণ্ডপে হেঁটে বেড়াতেও নয়। চির-সাতাশ
বছরের যৌবন এ বার দেখা যাবে সেলুলয়েডে। লিখছেন শতরূপা চক্রবর্তী |
নীললোহিত যার বয়স বাড়ে না সাতাশের বেশি। চিরযুবা-চিরনবীন সেই বোহেমিয়ান নীললোহিতকে ভুলতে পারে না আপামর বাঙালি। বেকার জীবনেই তার আনন্দ। কখনও তাকে দেখা যায় মাঠে-ঘাটে ঘুড়ির পিছনে দৌড়তে কিংবা অনাহুতের মতো নেমন্তন্ন বাড়িতে। বইয়ের পাতা ছাড়িয়ে সিনেমার পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠতে চলেছে সেই ভবঘুরে যুবক।
প্রায় পঁচিশ বছর আগে নীললোহিতকে নিয়ে যে ছবিটি হয়েছিল তার নাম ‘শেষ দেখা হয়নি’। তবে ছবিটি সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি।
কিন্তু এ বার বিষ্ণু পাল চৌধুরী, যিনি এক সময় ছোট পর্দায় ‘জননী’ মেগা সিরিয়ালটি করেছিলেন, তিনি ফিরছেন নীললোহিতকে নিয়ে। ছবিটির প্রযোজক অসীম মুখোপাধ্যায়। ছবির নাম ‘নীললোহিত’, এটি তৈরি হতে চলেছে নীললোহিতের ‘নিয়তির মুচকি হাসি’ উপন্যাস অবলম্বনে। কেনই বা নীললোহিতকে নিয়ে ছবি করার কথা ভাবলেন তিনি? “আসলে আমাদের প্রত্যেকের মনেই রয়েছে নীললোহিত। তার মতো উদাসীন আর বোহেমিয়ান জীবন আমরা প্রত্যেকেই অবচেতন মনে চেয়ে থাকি। তা ছাড়া আমার প্রিয় কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তাই প্রিয় মানুষটির প্রতি এই ছবি হোক আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য,” জানান পরিচালক।
এটি বেশ পুরোনো একটি লেখা। যেখানে নীললোহিত ট্রেনে করে দার্জিলিং থেকে কলকাতায় ফিরছে। বীরভূমের কাছে কোনও একটি স্টেশনে ট্রেন আটকে যায়। কোনও উপায় না দেখে সে পার্শ্ববর্তী এক গ্রামে যায়। এখানেই ঘুরে যায় গল্পের মোড়।
|
|
|
সমদর্শী দত্ত |
বিষ্ণু পাল চৌধুরী |
|
নীললোহিতের চরিত্রে রয়েছেন সমদর্শী দত্ত। পরিচালক তাঁকে বেছে নিয়েছেন এর অন্যতম কারণ নীললোহিতের বয়সের সঙ্গে সমদর্শীর মিল রয়েছে। ছবিতে তাঁকে একটি নতুন লুকে পাওয়া যাবে। দিন কয়েকের না কামানো দাড়ি, উসকোখুসকো এলোমেলো চুল আর চোখে চশমা। উদাসীনতার ছাপ থাকবে তাঁর চেহারায়। কেমন লাগছে এই চরিত্র পেয়ে? একরাশ উচ্ছ্বাস ঝরে পড়ল সমদর্শীর গলায়। “আমি সত্যিই খুব ভাগ্যবান যে এ রকম একটা চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছি। আমি আমার সবটুকু দিয়ে চরিত্রটা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করব।” নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করছেন ঝিলিক ভট্টাচার্য।
সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন বিবস্বান পাল চৌধুরী। গানের সুর ও কথা তাঁরই। ছবির থিম সংটি গেয়েছেন রূপম ইসলাম।
পরিচালক জানান, “জুনের প্রথম সপ্তাহেই ছবির শ্যুটিং শুরু হবে। যাতে পুজোর মধ্যেই ছবিটি মুক্তি পেতে পারে।” শ্যুটিং-এর লোকেশন হিসেবে কোন জায়গার কথা মাথায় রেখেছেন পরিচালক? বিষ্ণুবাবু জানান, “যেহেতু উপন্যাসে গ্রামের কথা বলা আছে, তাই শ্যুটিং হবে মূলত শান্তিনিকেতনের আশেপাশে। খোয়াই, সোনাঝুরির জঙ্গল, কোপাই, কবিরাজপুর, অবিনাশপুর রাজবাড়ি, শালের জঙ্গল, অজয় নদীর বালিয়াড়ির চরের মতো জায়গাগুলোর কথা মাথায় রেখেছি।”
নীললোহিত ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাকে ধরে রাখা যায় না।
তবু লাল কাঁকুড়ে মাটিতে সোনাঝুরির জঙ্গলে নীললোহিতকে ধরে রাখার অদম্য ইচ্ছা আমাদের... |
|
|
|
|
|