দেশের প্রথম মহিলা জওয়ান শান্তি টিগ্গার চালসা এবং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের কাছে বড় অঙ্কের টাকার ধার রয়েছে বলে পুলিশকে জানালেন বাসিন্দারা। সোমবার সকালে চালসা স্টেশনে রেল পুলিশ ও মেটেলি থানার পুলিশ তদন্তে গেলে চালসার কয়েকজন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা পুলিশের কাছে ওই অভিযোগ করেন। তবে সরকারিভাবে এখনও কেউ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেননি।
এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার রেল হাসপাতালে ভর্তি শান্তিদেবী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর ভাই জয়প্রকাশ টিগ্গা বলেন, “দিদির দেনা থাকলেও তার সঙ্গে অপহরণের কোনও যোগাযোগ নেই। অযথা বিষয়টিকে গুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” সেনাবাহিনীর জওয়ান হলেও শান্তিদেবী রেলে কর্মরত।
চালসার ব্যবসায়ী কিশোর সরকার জানান, তিন মাস আগে ওঁর সঙ্গে পরিচয় হয়। উনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নিজের ছবি দেখান। তার পরে ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা বলে ৩০ হাজার টাকা চান। দু’মাসে টাকা শোধ দেবেন বলেও জানান। আগাম চেক দিলেও ব্যাঙ্কে দিতে না করতেন।
চালসার কাঠের ব্যবসায়ী কমল বিশ্বাস বলেন, “গত ডিসেম্বরে শান্তি টিগ্গাকে ৩০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলাম। তিন মাস পরে টাকা দেবেন বলে স্ট্যাম্প পেপারে লিখে দেন। এমনকী, ছেলের চাকরির ব্যাপারে সাহায্য করবেন বলেও জানান। এখনও টাকা পাইনি।” আর বাসিন্দা তথা মুদির দোকানদার শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “আমি শান্তি টিগ্গার কাছে ৭০ হাজার টাকা পাই। এরমধ্যে ২৫ হাজার টাকার জিনিসপত্র উনি দোকান থেকে নিয়েছিলেন।” অভিযোগগুলি পেয়ে পুলিশ তদন্তে নামে। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা বাজারে শান্তিদেবীর দেনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আলিপুরদুয়ারের রেলের ডিআরএম বীরেন্দ্র কুমার এদিন চালসা স্টেশনে যান। তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। হাসপাতালে শান্তিদেবী রেলে কর্মী সংগঠনের নেতাদের জানান, অপহরণের আতঙ্কের জেরে তিনি চালসা ছেড়ে অন্যত্র যেতে চান। তাঁর ছেলেরাও চাইছে না তিনি চালসায় আর কাজ করেন। গত ৯ মে টানা ৩৬ ঘন্টা ডিউটি করারা পর বাজারে যাওয়ার সময় চালসা এলাকা থেকে একদল দুস্কৃতী তাঁকে অপহরণ করে একটি নজর মিনারের সাথে বেঁধে রাখে বলে শান্তিদেবীর অভিযোগ।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের এডিআরএম বোনিফেস লাকড়া জানান, শান্তি টিগ্গা রেলের পয়েন্টস ম্যানের কাজ করেন। তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি, ঘটনার আগে টানা ৩৬ ঘণ্টা টানা ডিউটি করানোর অভিযোগ করেছেন। তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যত্র বদলির বিষয়টি শুনেছি। উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি আলোচনা করা হবে।
|