দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উদ্বৃত্ত চাল জলপাইগুড়ির বন্ধ চা বাগানে পাঠাবে রাজ্য। এ ছাড়াও ভুয়ো রেশনকার্ড ঠেকাতে প্রতি জেলায় ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু করা হবে। সোমবার মালদহ ও বালুরঘাটে এ কথা জানান খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, “জলপাইগুড়ির বন্ধ চা বাগান গুলিতে গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে শ্রমিক পরিবারগুলির মধ্যে চাল সরববরাহ করা হয়। এবছর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ধানের উৎপাদন খুব ভাল হয়েছে। সেখানকার উদ্বৃত্ত চাল বন্ধ চা বাগানে পাঠানো হবে।’’ তিনি জানান রাজ্যে ৯ কোটি ১৩ লক্ষ রেশন কার্ড আছে। এখন পর্যন্ত ৭৭ লক্ষ জাল কার্ডের সন্ধান মিলেছে। রাজ্যে আরও ৬৬ হাজার জাল কার্ড ছড়িয়ে আছে। জাল কার্ড ধরে দ্রুত প্রতিটি জেলায় ডিজিটাল রেশনকার্ড চালু হবে। ওই কার্ডে গ্রাহকদের ছবি থাকবে।
ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার বকেয়া টাকা না মেটানোয় কেন্দ্রের সমালোচনা করে এ দিন খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী বলেন, “রাজ্য কংগ্রেসের এক নেতার অঙ্গুলি হেলনে খাদ্য সরবরাহ দফতরের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে কেন্দ্র । এফসিআইয়ের কাছে রাজ্যের পাওনা ৫২ কোটি টাকা পড়ে আছে। আগে পাওনা টাকা দু’এক দিনে মিটিয়ে দেওয়া হত। এখন মাসের পর মাস টাকা দেওয়া হচ্ছে না।” খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী অভিযোগ করেন, শুধু টাকা নয়। চাল গম রাখা নিয়েও গড়িমসি করছে এফসিআই। সকালে বলা হচ্ছে গুদাম খালি। বিকেলে খবর আসছে গুদামে জায়গা নেই। সমস্যা মেটাতে রাজ্যের আরও কয়েকটি জায়গায় গুদাম তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য সরবরাহ দফতর। এ জন্য সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে। প্রায় ৪ লক্ষ মেট্রিক টন শস্য রাখার ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী বলেছেন, “এই মূহূর্তে রাজ্যে ১২ লক্ষ ৪২ হাজার ৯১৫ টন চাল মজুত রয়েছে। চালের মিলগুলিতে মজুত আছে আরও ৫ লক্ষ ৫৩ হাজার ৮৮৯ টন চাল। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২২ লক্ষ টন চাল মজুত করা হবে।
সরকারি গণবিলিব্যবস্থায় অন্ত্যোদয় যোজনায় ইউনিট পিছু সপ্তাহে ২ টাকা দরে ১ কেজি চাল দেওয়া হয়। অন্নপূর্ণা যোজনায় বিনামূল্যে মাসে ইউনিট পিছু ১০ কেজি চাল সরবরাহ করে খাদ্য সরবরাহ দফতর। জেলা খাদ্য সরবরাহ নিয়ামক ভাস্কর হালদার এই প্রসঙ্গে বলেন, “দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রতিবছর গড়ে চাল সংগ্রহের পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ টন। অথচ ওই জেলায় প্রতিবছর চালের প্রয়োজন হয় ২৪ হাজার টন। বাকি প্রায় ৮৫ হাজার টন চাল দক্ষিণ ২৪ পরগণা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং কোচবিহার জেলায় সরবরাহ করা হয়। এ বার উদ্বৃত্ত চালের কিছু জলপাইগুড়ি জেলার বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের গণ বণ্টনে দেওয়া হবে।” গ্রাহকদের সচেতনতা বাড়াতে এ বার ‘এসএমএস’ চালু করতে উদ্যোগী খাদ্য সরবরাহ দফতর। জানা গিয়েছে, ডিস্ট্রিবিউটারেরা গ্রামবাসীকে এসএমএস করে জানিয়ে দেবেন ডিলারদের তাঁরা কী পরিমাণ চাল, গম, তেল সরবরাহ করেছেন। খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী মনে করেন এটা ঠিক নতো হলে বাসিন্দারা সঠিক তথ্য পেয়ে জিনিস বুঝে নিতে পারবেন। |