মা অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট আর ছেলে সেই সংস্থারই শাখা ইউনিটের ম্যানেজার। দু’জনের নামে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হওয়ায় মা-ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়িতে। মা ও ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁদেরই আইনজীবী এক আত্মীয়া। সোমবার শহরের নিবেদিতা সরণি এলাকা থেকে শাশ্বতী কুণ্ডু ও তাঁর ছেলে প্রীতমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। শহরেরই বাসিন্দা আইনজীবী পৌলমী রায় তাঁদের মাধ্যমে সংস্থায় ৩ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন। অভিযোগ, টাকা জমা রাখার মেয়াদ পার হয়ে যাওয়ার পরেও গত কয়েক মাস ধরে চেয়ে সেই টাকা না পাননি তিনি। গত ৯ মে সেই আমানতকারী আইনজীবী জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। একই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়েছেন ধৃতদের বাড়ির মালিকও। শাশ্বতীদেবী এবং প্রীতম যে বাড়িতে ভাড়া রয়েছেন, তার মালিকের বিরুদ্ধে কটূক্তি করার অভিযোগ দায়ের করেন পৌলমীদেবী। তাঁর অভিযোগ, টাকা চেয়ে এজেন্টের বাড়িতে গেলে বাড়ির মালিক শশাঙ্ক বিশ্বাস তাকে কটূক্তি করতেন। ধৃত তিন জনকেই ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছে জেলা আদালত। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “আমানতকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”
একই মামলায় জলপাইগুড়ি শহরের একটি স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি ইউনিস্টারের এজেন্টদের টিম লিডার হিসেবে কাজ করতেন বলে আমানতকারী আইনজীবী অভিযোগ করেছেন। তাঁর খোঁজেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার ধৃত শাশ্বতী দেবী বলেন, “আমাদের তো কিছু করার নেই। রুজি রোজগারের জন্য আমি এজেন্সি করতাম। ছেলে ওই সংস্থার বেতনভুক কর্মী ছিল। মাস খানেক ধরে অফিস বন্ধ। সংস্থার শীর্ষকর্তারাই একমাত্র কিছু করতে পারেন। আমরা টাকা নিয়ে সংস্থায় জমা দিতাম।”
মাস দেড়েক ধরে জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়ায় ইউনিস্টারের অফিসটি বন্ধ। সোমবার ধৃত শাশ্বতীদেবী এক বছর ধরে সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। যুবক ছেলেকে নিয়ে শাশ্বতীদেবী ১২ বছর জলপাইগুড়িতে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। স্বামী মালবাজারে থাকেন। এ দিন আদালত চত্বরে শাশ্বতীদেবী বলেন, “পৌলমী আমার ভাগ্নি হয়। তবে টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই।”
পৌলমী রায় বলেন, “দেড় বছর ধরে নানা সময়ে আমাকে অনেক গল্প বলে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। শাশ্বতী এবং তাঁর ছেলে প্রীতম দুজনেই বিভিন্ন সময়ে আমার থেকে টাকা চাইছে। মেয়াদ শেষের পরে যখন টাকা তোলার কথা বলি, তখন বাহানা করতে থাকেন। ওদের বাড়িতে নিতে গেলে বাড়িওয়ালা আমাকে গালিগালাজ করত। তাই বাধ্য হয়ে অভিযোগ করেছি।” সংস্থার আরও বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন পৌলমীদেবী। |