আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হতেই এনায়েতপুর অস্ত্র মামলায় অভিযুক্ত সিপিএম কর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হল তৃণমূল। দলের মেদিনীপুর সদর ব্লক সভাপতি দিলীপ দে বলেন, “দু’-তিন দিনের মধ্যেই কোতোয়ালি থানা ঘেরাও করে আইসিকে ডেপুটেশন দিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানাব।”
গত ১৩ মার্চ মেদিনীপুর সদর ব্লকের এনায়েতপুর থেকে মাটি খুঁড়ে ৭০টি বন্দুক-রাইফেল উদ্ধার করে যৌথবাহিনী। যেখান থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়, তার অদূরেই সিপিএমের মণিদহ লোকাল কমিটির অফিস। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার-সহ ১২ জন নেতা-কর্মীর নামে কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তৃণমূলের মণিদহ অঞ্চল সভাপতি অঞ্জনকুমার বেরার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলাও রুজু করে। এই মামলায় আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে গত ১২ এপ্রিল মেদিনীপুর জেলা ও দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হন দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য-সহ ৬ সিপিএম নেতা-কর্মী। আবেদনের প্রেক্ষিতে শনিবার শুনানি হয়। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক সমর রায় অভিযুক্তদের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন।
এরপরই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয় তৃণমূল। তৃণমূলের মণিদহ অঞ্চল সভাপতি অঞ্জনকুমার বেরা বলেন, “পুলিশের উচিত, দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা।” একধাপ এগিয়ে দলের ব্লক সভাপতির বক্তব্য, “দীপক সরকারকেও গ্রেফতার করতে হবে।”
সিপিএম সূত্রে খবর, ঘটনার পর দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, অস্ত্র-কাণ্ডে যাঁদের নামে অভিযোগ তাঁদের কেউই লুকিয়ে বা আত্মগোপন করে থাকবেন না। তাঁদের মতে, এটি মিথ্যে মামলা। ফলে লুকিয়ে বা আত্মগোপন করে থাকার প্রশ্ন নেই। আদালতের রায়ের পর অবশ্য চাপে পড়েছে সিপিএম। বিশেষ করে সামনে যখন পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হতে পারে। রবিবার সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের বক্তব্যেও এই ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, “তৃণমূলের মন্ত্রীই তো আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করছেন (পঞ্চায়েত মামলার রায় প্রসঙ্গে)। মেদিনীপুর আদালত একটি রায় দিয়েছে। এরপর হাইকোর্ট রয়েছে। উচ্চতর আদালতে তো আবেদন করা যায়ই।”
এই অবস্থায় থানা ঘেরাও কর্মসূচি করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে। স্বরাষ্ট্র দফতর রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। থানা ঘেরাও হলে পুলিশের বিরুদ্ধেই স্লোগান তুলতে হবে। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “সরকার আমাদের। পুলিশ সেই সরকারেরই অধীন। তাদের বিরুদ্ধে কী এ ভাবে স্লোগান তুলে সরব হওয়া যায়?”
|