আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক সিপিএমের এক কর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে হাওড়ার আমতার বালিচক পঞ্চায়েত এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম শিশির দাস।
তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, শিশির আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বালিচক অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি স্বপন পোড়েলকে আক্রমণ করে। তাঁকে ধরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ আসার আগে আগে শিশিরকে গাছে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় একটি পুজোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ভাবে কয়েক জনের মধ্যে গোলমাল হয়েছিল। এই ঘটনা তারই জের কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিশিরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে বলে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সরকারের দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে এ দিন সকালে বালিচকের শিমুলতলায় দলীয় কার্যালয়ে বসে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নেতা-কর্মীরা। স্বপনবাবু এবং কয়েক জন দলের কর্মী কার্যালয়ের বাইরে ছিলেন।সকাল ১০টা নাগাদ নাগাদ শিশির সেখানে আসেন। তাঁর সঙ্গে বচসা বাধে স্বপনের। তৃণমূলের অভিযোগ, পকেট থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে শিশির স্বপনবাবুকে গুলি করতে উদ্যত হন। স্বপনবাবু বলেন, “আমি কোনও কিছু বোঝার আগে বিনা প্ররোচনায় রিভলভার বের করে আমাকে নিশানা করে শিশির। দলের অন্যান্য কর্মীরা আমাকে ধরে ফেলায় সে গুলি ছোড়ার সুযোগ পায়নি। আমিও প্রাণে বেঁচে যাই।” এরপরেই গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে শিশিরকে বেধড়ক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিশিরকে উদ্ধার করে। পরে তৃণমূলের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের পকেট থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিন সন্ধ্যাবেলায় বালিচক পঞ্চায়েত এলাকা জুড়ে দলীয় নেতার উপরে হামলার প্রতিবাদে মিছিল এবং পথসভা হয়। তৃণমূল নেতা জয়ন্ত পোল্যে বলেন, “দিনের বেলায় প্রকাশ্যে আমাদের দলের নেতার উপরে যে হামলা হল তাতে আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।”
সিপিএমের পক্ষ থেকে অবশ্য পাল্টা জানানো হয়েছে, তৃণমূলের অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন।
আমতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা সিপিএম নেতা মানবেন্দ্রনাথ রায়ের অভিযোগ, “ওই এলাকায় বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে আমাদের দলের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল।”
শিশিরের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকে ‘সাজানো ঘটনা’ বলে উল্লেখ করে মানববাবু বলেন, “বিনা প্ররোচনায় শিশিরকে গাছে বেঁধে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়। আমাদের অনুমান, সেই অপরাধ ঢাকবার জন্যই নাটক করে তার পকেটে আগ্নেয়াস্ত্র গুঁজে দিয়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে তৃণমূল।” ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানায় পুলিশ। |