গা-ঢাকা দেওয়ার আগে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে তাঁর কয়েক দফা বৈঠক হয়েছিল বলে পুলিশকে জেরায় জানিয়েছিলেন সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন। ওই নেতারা কারা, তা পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানায়নি। সোমবার তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষ অন্তত মেনে নিলেন, সুদীপ্তর সঙ্গে তাঁর একাধিক বৈঠক হয়েছিল।
কেন বৈঠক, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কুণাল এ দিন সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, সারদার সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা তাঁদের বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ড পাননি। ওই অবস্থায় সংস্থা বন্ধ হতে চলেছিল। সহকর্মীদের স্বার্থের কথা ভেবেই তিনি সুদীপ্তর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এতে কোনও অন্যায় নেই বলেই কুণালের দাবি।
জেরায় সুদীপ্ত তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন, সারদার আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ছিল। হাল ফেরাতে তিনি তাঁর মালিকানায় থাকা খবরের কাগজ ও টিভি চ্যানেল বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের কয়েক জন নেতা এই কাজে তাঁকে বাধা দিতে থাকেন। কারা তাঁকে বাধা দিয়েছিলেন, তা অবশ্য তদন্তকারীরা বিশদে জানাননি।
এ দিন কুণাল বলেন, “উনি (সুদীপ্ত) যখন সংবাদমাধ্যমের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন, তখন আমি সংস্থা বাঁচানোর তাগিদেই বৈঠক করি। তবে কোনও নির্দিষ্ট তারিখের বৈঠকের কথা বলা অপ্রাসঙ্গিক।”
সারদা মামলা নিয়ে এ দিন হাইকোর্টে হলফনামা দিতে গিয়েছিলেন কুণাল। হলফনামায় তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি সারদা ও তৃণমূলের মধ্যে কোনও সেতু ছিলেন না। তাই সারদা কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় তাঁকে অংশীদার করার কোনও যুক্তি নেই। হলফনামায় কুণাল আরও জানিয়েছেন, সারদা গোষ্ঠীর সংবাদমাধ্যম ব্যবসার (বেঙ্গল মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড) ‘সিইও’ ছিলেন তিনি। সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সম্পাদকীয় দফতর ছাড়া অন্য কাজকর্মে তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল না। ২০১১ সালের ১৫ এপ্রিল তিনি ‘সিইও’ পদে যোগ দেন। ২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল তিনি রাজ্যসভার সাংসদ হন।
২০১৩ সালের ৩ এপ্রিল তিনি সারদা-র চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন বলেও কুণাল তাঁর হলফনামায় জানিয়েছেন। এর পরই আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কুণাল। সেখানে জানান, ৩ এপ্রিল পদত্যাগ করার পরেও সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তাঁর একাধিক বার বৈঠক হয়।
|