খুনের প্রতিবাদে অবরোধ বোলপুরে
তালগাছে বাঁধা দোকানকর্মীর দেহ
দোকান থেকে কাজ সেরে রাতভর বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন সকালে বেল্ট দিয়ে তাল গাছে বাঁধা অবস্থায় সেই নিখোঁজ ব্যক্তিরই ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হল। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সকালে বোলপুর-নতুনহাট রাস্তায়, মুলুক গ্রাম লাগোয়া মাঠের ধারে উদ্ধার হওয়া দেহটি প্রফুল্ল হাজরা-র (৪৩)। তাঁর বাড়ি বোলপুর থানার বাহিরি গ্রামে। নিহত প্রফুল্লবাবু পেশায় বোলপুর শহরের একটি জুতোর দোকানের কর্মী। রবিবার রাতে দোকানের কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মোবাইল ফোনে কথা হয়েছিল বলেও তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু ওই রাতে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি।
বাহিরি বাসস্ট্যান্ডে ক্ষুব্ধ জনতার রাস্তা অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র
এসডিপিও (বোলপুরের) প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, “নিহতের স্ত্রী মীরা হাজরা একটি খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটক করা হয়েছে।” মৃতদেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ দিকে পুলিশের একটি সূত্রের খবর, ওই খুনের ঘটনায় পুলিশ জুতোর দোকানের এক পুরনো কর্মী ও তার সঙ্গীকে আটক করেছে। ওই কর্মীর কাছ থেকে প্রফুল্লবাবুর মোবাইল ফোনটিও মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পূর্ব শত্রুতার জেরে এই খুন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে নানুর থানার বেলেগ্রামের বাসিন্দা প্রফুল্লবাবু বিয়ের পর থেকে বাহিরি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। রবিবার সকালেও খাওয়াদাওয়া করে দোকানে গিয়েছিলেন প্রফুল্লবাবু। দোকানের কাজকর্ম সেরে সাইকেল চালিয়ে রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ বাড়ি ফিরতেন। প্রফুল্লবাবুর স্ত্রী মীরাদেবী বলেন, “রবিবার রাতে তাঁর মোবাইলে ফোন করলে আমার স্বামী জানিয়েছিলেন তিনি বাড়ির পথে। কিন্তু রাত ১০টার পরেও তিনি না ফেরায় ফের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু তখন তাঁর মোবাইল ফোনটি ‘সুইচড্ অফ’ বলছিল।” বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় প্রফুল্লবাবুর পরিবার বিষয়টি পাড়া-প্রতিবেশীদের জানান। অনেক রাত পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর হদিস মেলেনি। মীরাদেবীর দাবি, “গভীর রাতে আমি ফের স্বামীর মোবাইলে ফোন করলে সেটি দেখি তখন চালু আছে। ফোন ধরেই উল্টো দিক থেকে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। কিন্তু স্বামীর কোনও খোঁজ পাইনি।”
এ দিন সকালে বাড়ির লোক ফের খোঁজ শুরু করলে খবর পান, মুলুক গ্রামের কাছে একটি মাঠের ধারে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ মিলেছে। ততক্ষণে অবশ্য স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ওই দেহটিকে প্রফুল্ল হাজরা-র দেহ বলে শনাক্ত করেন। পুলিশ সেই দেহ উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ সূত্রের খবর, বোলপুর-নানুর রাস্তার উপর মুলুক গ্রামের শেষ প্রান্তে এক মাঠের ধারে তাল গাছের নীচে ওই দেহটি পড়ে ছিল। প্রায় অর্ধনগ্ন সেই মৃতদেহের মাথা, গলা-সহ শরীরের একাধিক জায়গায় ক্ষত চিহ্ন ছিল। প্রফুল্লবাবুর নিথর দেহ বেল্ট দিয়ে তাল গাছে বাঁধা ছিল। প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা তা প্রথম দেখতে পান। এ দিকে নিহতের পরিবারকে না জানিয়ে পুলিশ মৃতদেহটি ঘটনাস্থল থেকে তুলে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানোকে কেন্দ্র করে বাহিরি গ্রামের বাসিন্দা এবং নিহতের পরিবারের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। পরে এসডিপিও (বোলপুর) প্রশান্ত চৌধুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এরপরেও অবশ্য কিছুক্ষণের জন্য বাহিরি বাসস্ট্যান্ডে পথ অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.