মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডে থাকা বয়সের প্রমাণ উপেক্ষা করে এক কর্মীকে নির্দিষ্ট সময়ের পাঁচ বছর আগেই চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেছিল ইসিএল। সম্প্রতি সুকুমার দাঁ নামে ওই কর্মীকে পদে বহাল ও বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
১৯৮০ সালের ২ এপ্রিল অন্ডালের ছোড়া কোলিয়ারিতে চাকরি শুরু করেন সুকুমার দাঁ। মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড অনুযায়ী, তাঁর জন্ম তারিখ ১৯৫৭ সালের ৩ অক্টোবর। সুকুমারবাবু জানান, ১৯৮৬ সালে তাঁকে মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে বসানো হয়। সেখানে তিনি জানতে পারেন, বোর্ডের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, তাঁর জন্ম তারিখ ১৯৫২ সালের ৩০ জুন। সার্ভিস বুকের প্রত্যয়িত প্রতিলিপিতে এই তারিখ দেখার পরে ১৯৮৭ সালের ২৭ মার্চ তিনি খনি-কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে আপত্তি জানান। তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ডে তাঁর জন্মতারিখ ১৯৫৭ সালের ৩ অক্টোবর। সেই নথিও তিনি জমা দেন। কর্তৃপক্ষ তাঁকে বিষয়টা দেখার জন্য আশ্বাস দেন বলেও তাঁর দাবি। কিন্তু ২০১২ সালে তিনি জানতে পারেন, ওই মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁকে ওই বছরেই অবসর দেওয়া হবে। অগত্যা ওই বছরের ১২ মে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
এ দিকে ২০১২ সালের ১ জুলাই ইসিএলের তরফে তাঁকে অবসরের বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। যদিও সুকুমারবাবু সেই বিজ্ঞপ্তি মানেননি। তবে এ ক’দিন কর্মস্থলেও যাননি, বেতনও নেননি। সুকুমারবাবুর আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক সোমবুদ্ধ চক্রবর্তী তাঁর রায়ে জানান, যে মানদণ্ডের ভিত্তিতে চিকিত্সকেরা বয়স নির্ধারণ করেন, তা মানেনি সংস্থা নিযুক্ত মেডিক্যাল বোর্ড। হাইকোর্ট আরও জানায়, বয়সের প্রমাণপত্র হিসেবে কারও কাছে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড থাকলে, অন্য কোনও বিকল্পের দরকার নেই।
ইসিএলকে এক মাসের মধ্যে সুকুমারবাবুকে ওই পদে বহাল রেখে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এসিএলের সিএমডি কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, হাইকোর্টের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই সব কিছু করা হবে। |