আগুন লেগে ভস্মীভূত হল সাতটি দোকান। সোমবার সকালে বার্নপুর বাজারে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন গিয়ে দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ও দমকল।
বারবার এই বাজারে আগুন লাগায় প্রশ্ন উঠেছে অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে। বাজারটি রয়েছে ইস্কোর এলাকায়। এ দিন ঘটনার পরেই সেখানে যান ইস্কোর প্রতিনিধিরা। পৌঁছন আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ লক্ষ্মণ ঠাকুরও। তাঁদের সকলেরই অভিযোগ, অগ্নি নির্বাপণের নিয়মনীতি অনেক ব্যবসায়ী না মানার ফলেই এমন ঘটছে। যদিও ব্যবসায়ীদের একাংশ তা মানতে চাননি।
বার্নপুর ইস্কো রোডে থানার উল্টো প্রান্তে সার বেঁধে রয়েছে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী দোকান। প্লাস্টিকের ছাউনি-সহ নানা দাহ্য বস্তু দিয়ে দোকানগুলি তৈরি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ বাজার এলাকার একটি কাপড়ের দোকান থেকে আগুন বেরোতে দেখা যায়। হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরপর আগুন ধরে যায় আশপাশের জুতোর দোকান, আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকান, একটি বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের দোকানে। |
পুড়ছে দোকান। ছবি: শৈলেন সরকার। |
আগুন দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে যান। খবর পেয়ে পৌঁছয় হিরাপুর থানার পুলিশ। রাজ্য দমকলের দু’টি ও বার্নপুর ইস্কো দমকলের একটি ইঞ্জিনও ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নেভাতে প্রায় দু’ঘণ্টা সময় লাগে। সাতটি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও আগুনের গ্রাস থেকে রক্ষা পায় বাকিগুলি।
আসানসোলের দমকলের ওসি সেলিম জাভেদ বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলেই মনে হচ্ছে। তবে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা ফরেন্সিক তদন্তে বোঝা যাবে।” যদিও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দাবি, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, দোকানগুলিতে জেনারেটরের বিদ্যুত্ ব্যবহৃত হয়। বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত জেনারেটর চলে। তাই সকালে শর্ট সার্কিটের প্রশ্ন নেই বলেই তাঁদের বক্তব্য। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সাব্বির খান জানান, ভোর ৬টা পর্যন্ত এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা রয়েছে। তার মধ্যে আগুন লাগেনি। সাব্বিরের কথায়, “সকাল ৭টা নাগাদ আমি আগুন লাগার খবর পাই ফোনে। যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছই, দোকান অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে।”
বছরখানেক আগেই বার্নপুর বাজারে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল প্রায় দেড়শো দোকান। মেয়র পারিষদ লক্ষ্মণ ঠাকুর বলেন, “এ নিয়ে পাঁচ বার এই বাজারে আগুন লাগল। প্রতি বারই নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ দোকানের মালিক সেই পরিকল্পনা মতো কাজ করেন না। তাই বারবার এমন ঘটছে।” তিনি আরও জানান, স্থায়ী অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য মেয়র, ইস্কো কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে রূপরেখা তৈরি হবে। প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে নিয়মনীতি মেনে চলতে বাধ্য করা হবে। ইস্কোর ওই বাজারের পরিদর্শক শিবনন্দন মিশ্রেরও দাবি, ইস্কোর তরফে অগ্নি নির্বাপণের নিয়ম ঠিক করে দেওয়া সত্ত্বেও অনেক ব্যবসায়ী তা মানেননি। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। |