রবিবার ভোরে ঘণ্টা দু’য়েকের ঝড়-বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গের তিন জেলা। মালদহে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে বোরো ধান, ভুট্টা সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে তিন জেলার প্রশাসনই জরুরি ভিত্তিতে পরিদর্শনের কাজ শুরু করেছে। উত্তরের বাকি তিন জেলায় ঝড়ের দাপট বেশি না থাকলেও এদিন সকাল থেকেই শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির আকাশ ছিল কালো মেঘে ঢাকা। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতও হয়েছে।
এ দিন ভোরে মালদহের চাঁচল মহকুমার হরিশচন্দ্রপুরে বাজ পড়ার পৃথক ঘটনায় এক কিশোরী ও তিন বালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম বিট্টু সাহা (১০), জয়প্রকাশ সিংহ (১১) এবং মহম্মদ হোসেন (১১)। এবং মাম্পি খাতুন (১৩)। ওরা সকলেই ঝড়ের সময় গাছ থেকে পড়া আম কুড়োতে বাগানে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। অন্য একটি বাজ পড়ার ঘটনায় কলিগ্রামে জমিতে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে মৃত্যু হয় পাপ্পু দাস (৩২) নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার। চাঁচলের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বলেন, “মৃতদের পরিবারগুলোর জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা হচ্ছে। এ ছাড়া সরকারি সাহায্য যাতে ওরা দ্রুত পায় তার ব্যবস্থাও ব্লক প্রশাসনকে করতে বলা হয়েছে।” |
ইসলামপুরে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টা খেত। নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়। সেই সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। ঝড়ের সময়ে আম কুড়োতে পাশের বাগানে যায় কুমেদপুরের তালগ্রামহাটের দুই বালক বিট্টু ও জয়প্রকাশ। দুজনের বাড়ি পাশাপাশি। স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে দু’জনেই দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। লাগোয়া বিহারের কুশল গ্রামের বাসিন্দাও হোসেনও সেই একই বাগানে আম কুড়োতে এসেছিল বলে জানা গিয়েছে। ঝড় বৃষ্টির মধ্যেই বাজ পড়ে তড়িদাহত হয়ে বাগানে লুটিয়ে পড়ে তিন জনই। একই সময়ে পাশের গ্রাম বাগমারার কিশোরী মাম্পিও বাড়ির পাশের বাগানে আম কুড়োতে ব্যস্ত ছিল। আমবাগান থেকেই সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মাম্পির বিদ্যুতস্পৃষ্ট দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাজ পড়ে গুরুতর জখম হয় বকচড়ার বালক নৌসাদ আলিও। স্থানীয় হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে বলে জানা গিয়েছে।
ঝড় ও শিলাবৃষ্টির জেরে উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, করণদিঘির সহ বিভিন্ন এলাকাতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়ায় বিদ্যুত পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “কালবৈশাখির প্রভাবেই ঝড় বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টাতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।” |