উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এনবিএসটিসি) বাসের ধাক্কায় ওই বাসেরই এক যাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল। রবিবার সকালে কোচবিহারের কাছারি মোড়ে। মৃতার নাম সরস্বতী রায় (৬২)। তাঁর বাড়ি পাটাকুড়ার সাহিত্যসভা বাইলেন এলাকায়। এ দিন সকালে আলিপুরদুয়ার থেকে সরস্বতীদেবী স্বামী জগদীশ রায়ের সঙ্গে কোচবিহার আসছিলেন। সাড়ে সাতটা নাগাদ কাছারি মোড়ে তাঁরা বাস থেকে নামেন। বাসটি আচমকা বাঁক নিয়ে সরস্বতীদেবীকে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। |
এলাকার বাসিন্দারা গুরুতর জখম অবস্থায় বৃদ্ধাকে এমজেএন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চালকের গাফিলতিতে বৃদ্ধার মৃত্যুর অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামেন উত্তেজিত বাসিন্দারা। সকাল ৮টা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা কাছারি মোড় ও গুঞ্জবাড়ি মোড়ে রাস্তা অবরোধ হয়। নিগমের নিউ বাসস্ট্যান্ড চত্বরের অফিস ঘরের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘাতক বাসের চালক সুভাষ নাগকে পুলিশ গ্রেফতার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, ‘গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চালককে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সরস্বতীদেবী ও তাঁর স্বামী কয়েকদিন আগে বিহারের মজ্জফরপুরে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান। এদিন সকালে বিহারের একটি বাসে তাঁরা আলিপুরদুয়ারে নামেন। সেখান থেকে এনবিএসটিসির বাসটিতে কোচবিহারে আসেন। মৃতার ছেলে পেশায় মুদির দোকানদার রূপনারায়ণ রায় বলেন, “চালকের গাফিলতিতেই মায়ের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। বাবা-মা বাস থেকে নামামাত্র আচমকা বাসটি চালাতে শুরু করেন চালক। বাসের ধাক্কায় মা চাকার তলায় পড়ে যান।”
এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জয়দেব ঠাকুর বলেন, “ওই দুর্ঘটনায় চালক বা অন্য কর্মীর কোনও গাফিলতি ছিল কী না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি বাসস্টান্ডের অফিসে ভাঙচুরের ঘটনার জন্য পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে।” নিগমের পরিচালন বোর্ডে সদস্য আবদুল জলিল আহমেদ ঘটনার খবর পেয়ে নিউ বাস স্ট্যান্ডে যান। তিনি বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। ঘটনার পরেই চালক সুভাষ নাগ আত্মসমর্পনের জন্যই বাসটি নিয়ে থানায় যান। তারপরেও অফিসে ঢুকে ভাঙচুরের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য পুলিশকে বলেছি।”
অভিযোগ, শহরের কাছারি মোড়ের মত ব্যস্ততম এলাকাতেও বিধি ভেঙ্গে যান চলাচল রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বিষয়টি দেখা দরকার। |