ভরদুপুরে হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ সদ্যোজাত
রদুপুরে সকলের চোখের সামনে থেকে উধাও হয়ে গেল সদ্যোজাত এক পুত্রসন্তান।
নদিয়ার করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে এই অভিযোগ করেছেন ওই সদ্যোজাতের মা রেণুকা বিবি। শনিবার রাতে ওই হাসপাতালেই তাঁর পুত্রের জন্ম হয়। নিজের শয্যাতেই ছিল সেই সন্তান। আর ছিল বড় ছেলে যমশের। বছর তিনেকের যমশেরের জিম্মায় সদ্যোজাত সন্তানকে রেখে রবিবার দুপুরে শৌচাগারে গিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে দেখেন যমশের একা বসে রয়েছে। রেণুকা তাঁর সন্তানের খোঁজ করতে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি অন্য মহিলারা জানান, মিনিট কয়েক আগেই কয়েকজন এসে বাচ্চাটিকে কোলে তুলে আদর করেন। তারপরে এক মহিলা এসে তাকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে যান। রেণুকা বলেন, “ঘরের অন্যেরা ভেবেছিলেন আমারই কোনও আত্মীয় এসে বাচ্চাটিকে নিয়ে গিয়েছে।” সে কথা শুনে আর কাল মাত্র দেরি করেননি তিনি। যমশেরের হাত ধরে ছুটে চলে যান হাসপাতালের বাইরে। সেখানে সদ্যোজাতকে নিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে চলে যান বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে তন্নতন্ন করে নিজেই খোঁজ করেন। কোথাও সন্ধান মেলেনি ছেলের।
রেণুকা বিবি
রেণুকার স্বামী কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকেন। মাস তিনেক হল রেণুকার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। এক মাসি রয়েছেন। সেই মহিলাকে দুপুরের পর থেকে আর হাসপাতাল চত্বরে দেখা যায়নি। রাত পর্যন্ত তাঁর কোনও খোঁজও পুলিশ পায়নি। হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, নতিডাঙার বাসিন্দা রেণুকা বড় ছেলের হাত ধরে একা একাই এসে ভর্তি হন হাসপাতালে। তারপরে এই দিন সকালে ওই মাসি হাসপাতালে এসেছিলেন। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কিন্তু সকলের চোখের সামনে থেকে কী করে এক সদ্যোজাতকে নিয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে কেউ বেরিয়ে যেতে পারেন? হাসপাতাল দায় সেরেছে রেণুকাকে এই দিন সকালেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, মা ও সদ্যোজাত দু’জনেই সুস্থ থাকায় এই দিন সকালেই রেণুকাকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও রেণুকা হাসপাতালে ছিলেন। তাঁর কথায়, “কই, ছুটির বিষয়ে তো কেউ কিছু বলেননি!” ঘটনার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক সুদীপা মণ্ডলের উত্তর, “যা বলার সুপার ও পুলিশকে বলেছি। সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলব না।”
এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে আগেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। মাস কয়েক আগে গুরুতর আহত এক স্কুল ছাত্রকে দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা না করে জরুরি বিভাগের সামনে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। সুপার রাজীব ঘোষ ছুটিতে ছিলেন। হাসপাতালের তরফে চিকিৎসক সমর বিশ্বাস বলেন, “এ দিন দুপুরে কেউ বা কারা ওই সদ্যোজাতকে নিয়ে গিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছে।” রাজীববাবু জানান, এই ঘটনায় হাসপাতালের কোনও কর্মী বা চিকিৎসকের গাফিলতি থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই দিন রাতে রেণুকা ওই হাসপাতালেই রয়েছেন। সদ্য মা হয়েছেন। তারপরে সারা দিন শরীর মনের এই ধকল নেওয়ার পরে বিধ্বস্ত চেহারায় বসেছিলেন নিজের শয্যায়। ক্লান্ত স্বরে বলছিলেন, “ছেলেটা খুব সুন্দর দেখতে হয়েছিল। নাম রেখেছিলাম নজরুল।” সারা দিন নিজে কিছু খেতেও চাননি।
শুধু শক্ত মুঠিতে চেপে ধরে রেখেছিলেন যমশেরের হাত।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.