স্বাস্থ্যকেন্দ্র নয়, যেন ‘নেই’ এর রাজ্য। প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের ভরসাস্থল নওদার সর্বাঙ্গপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো বলতে কিছুই নেই। তিনটি ভবনের মধ্যে কর্মী আবাসন ভেঙেচুরে গিয়েছে। তার অস্তিত্ব ঠাউর করায় দায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কোনও বোর্ড নেই। তাই বাইরের কেউ বুঝতেই পারেন না ঝোপঝাড়ে পূর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থান। |
আগাছায় ঢেকেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন।—নিজস্ব চিত্র। |
সন্ধ্যায় হাসপাতাল চত্বর সমাজ বিরোধীদের আস্তানায় পরিণত হয় বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন কোনও চিকিৎসক নেই। ফলে পরিষেবাও মেলে না। এলাকাবাসীদের ভরসা মেঠো পথ ডিঙিয়ে পনেরো কিলোমিটার দূরের আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল। অনেকে আবার প্রায় ২৫ কিমি দূরের বেলডাঙা-১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতালে যান।
নওদার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বোধাদিত্য বক্সী বলেন, ‘‘চিকিৎসক কম থাকায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী চিকিৎসক দেওয়া যায়নি। তবে প্রতি সোমবার একজন চিকিৎসক ওখানে ডিউটি করেন এবং একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রোজ থাকেন। একজন নার্সও ছিলেন। তিনি দু’মাস আগে অবসর নিয়েছেন।’’ সর্বাঙ্গপুর, দুধসর, বাইতিগাছা, রাজনগর এলাকার মানুষের ভরসাস্থল এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সর্বাঙ্গপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের শুকদেব কুণ্ডু বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জরুরি পরিষেবা মেলে না। যেটুকু পাওয়া যায় তাও অপর্যাপ্ত।’’ এলাকার বাসিন্দা অনিমা মণ্ডল, রাজু মণ্ডলের কথায়, “সোম থেকে শুক্র সকাল দশটার পর থেকে বেলা দুটো পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা থাকে। হঠাৎ করে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ছুটতে হয় বেলডাঙা বা আমতলায়।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও প্রাচীর না থাকায় রাতে এলাকায় অবাধে চলে মদ্যপান ও অসামাজিক কাজকর্ম। সর্বাঙ্গপুর অঞ্চল কংগ্রেস সভাপতি নীতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী কোনও চিকিৎসক নেই। অসুস্থ মানুষদের জন্য পানীয় জল পর্যন্ত মেলে না।’’ এলাকার প্রাক্তন শিক্ষক সত্যনারায়ণ বিশ্বাস বলেন, “পনেরো দিন আগে আমার ছেলের স্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলাম তাঁকে। সেখানে চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে ২৫ কিমি দূরে বেলডাঙায় নিয়ে গিয়েছি।’’ এ ছাড়া ফাঁকা মাঠের মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি থাকায় গ্রাম থেকেও মানুষকে অনেকটা পথ অতিক্রম করে আসতে হয়। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত পরিষেবার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এ বিষয়ে কারও কাছ থেকেই সদুত্তর পাওয়া গেল না।
|
চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
চিকিৎসায় গাফিলতিতে সদ্যোজাত শিশুর পায়ে ক্ষত তৈরির অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে। গত বুধবার রাতে মালবাজারের মাটিয়ালি গ্রামের বাসিন্দ জরিফা বেগমের পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। শিশুটির ওজন কম থাকায় তাকে পৃথক ওয়ার্ডে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের অভিযোগ, রবিবার সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছে শিশুটির পায়ে স্যালাইনের সুঁচ ফোটানোর জায়গায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এর পরে হাসপাতাল চত্বরে রোগীর পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখান। সুপার ব্রজেশ্বর মজুমদার বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” এ দিনই শিশুটিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। |