শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় জমি মাফিয়ারা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কে জয়রামনের কাছে অভিযোগ জানালেন বাসিন্দারা। রবিবার সেবক রোডে একটি অনুষ্ঠানে সাধারণ বাসিন্দাদের অনেকেই কমিশনারকে ওই অভিযোগ করেন। অনুষ্ঠানে শহরের সিপিএম কাউন্সিলর তথা আইনজীবী কমল অগ্রবাল বলেন, “সম্প্রতি শহরে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। জমির নকল নথি, এক জমি একাধিকবার বিক্রি, হুমকি দিয়ে জমি দখলের মত ঘটনা ঘটছে।”
আরও কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ভক্তিনগর, সেবক রোড, ইস্টার্ন বাইপাস, বর্ধমান রোড, মাটিগাড়া এলাকায় জমি মাফিয়ারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, “জমি সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। ‘ল্যান্ড ডিসপিউট সেল’ খোলা হবে। ভক্তিনগর এলাকায় জমির সমস্যা নিয়ে কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। সাধারণ মানুষের জমি মাফিয়াদের হাতে যাতে না যায় তা দেখা হবে।” |
বাসিন্দাদের মুখোমুখি শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কে জয়রামন। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
বাসিন্দারা জানান, এক দশক আগে শহর লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বাড়তে থাকে। শাসক দলের প্রথম শ্রেণির এক নেতার নামও তাতে জড়িয়ে যায়। সম্প্রতি ভক্তিনগরে বেশ কয়েকটি জমির গোলমাল সামনে আসে। কাউন্সিলর কমলবাবু বলেন, “জন প্রতিনিধি ও আইনজীবী হওয়ায় নানা অভিযোগ জানতে পারি। আশা করছি পুলিশ কমিশনার ব্যবস্থা নেবেন।”
কমিশনারেটের একাংশ থানায় দালাল’দের দৌরাত্ম্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, “ট্যাক্সি বুথ, রেল টিকিট কাউন্টার সহ একাধিক জায়গায় দালারা সক্রিয় বলে অভিযোগ পেয়েছি। কয়েকটি থানায়ও দালালদের দৌরাত্ম্য রয়েছে বলে শুনেছি। এটা চলতে দেওয়া যাবে না।” অনেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে সরব হন। অনিল অগ্রবাল নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, মোবাইলে তরুণীকে উত্যক্ত করার অভিযোগে তাঁকে আটক দু’ঘণ্টা থানায় আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই তরুণী অন্য কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “শুধু মোবাইলের শেষ নম্বর দুটো দেখেই পুলিশ আমাকে আটক করেছিল।” ফুলবাড়ির কংগ্রেস নেতা দেবাশিস প্রামাণিকের অভিযোগ, এনজেপি ফাঁড়ির পুলিশ গরিব মানুষের অভিযোগ নিতে গড়িমসি করে। অনেক সময় থানা থেকে বার করে দেওয়া হয়। এক মহিলা অভিযোগ করেন, স্বামীর অত্যাচারে তিনি ঘর ছাড়া। স্বামী প্রাণে মেরে ফেলা ও অ্যাসিড ছুঁড়ে মুখ পোড়ানোর হুমকি দিলেও পুলিশ কিছু করছে না।
ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য, মদের আসর, নিয়ম ভেঙে অটো চলাচল, পার্কিং সমস্যা নিয়ে বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। কমিশনার বাসিন্দাদের বলেন, “শুধু অপরাধ নয়, কেউ অসুস্থ হলেও ১০০ ডায়াল করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।” |