আইপিএল জ্বরে যখন কাবু ক্রিকেট পাগল জনতা, তখন ভবিষ্যতের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে খুঁজে পেতে আইপিএলের ধাঁচে জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে মেদিনীপুরে শুরু হল আন্তঃজেলা ক্রিকেট লিগ। তবে রবিবার লিগের প্রথম দিনে তেমন উন্মাদনা চোখে পড়ল না। হাতে গোনা কয়েকজন মাঠে এলেন। উদ্যোক্তাদের আশা, লিগ যত এগোবে, ততই মাঠে ভিড় বাড়বে। রবিবার সকালে মেদিনীপুরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে লিগের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক (সদর) অমিতাভ দত্ত, আইএফএ-র কোষাধ্যক্ষ কৃষ্ণদাস পাল প্রমুখ। জেলার যে ১২টি দল নিয়ে এই লিগ শুরু হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সাউথ স্টার, খড়্গপুর ব্লুজ, গীতাঞ্জলি ক্লাব, আলোর দিশারী ক্লাব, পি কে সান্যাল ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্প, আর এন ডি, মেদিনীপুর স্পোটিং ক্লাব, ওয়াইট ইলেভেন, স্যান্টাফোকিয়া অ্যাথলেটিক ক্লাব, বঙ্গশ্রী অ্যাথলেটিক ক্লাব এবং ঘাটাল ও ঝাড়গ্রাম মহকুমার ক্রিকেট টিম। আগামী ২৫ মে লিগের ফাইনাল।
|
দর্শকাসন ফাঁকা। তার মধ্যেই চলছে খেলা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ |
জেলাস্তরে টি-২০ ক্রিকেট লিগ এই প্রথম। মেদিনীপুর, খড়গপুরের মতো শহরে ইদানীং ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পের সংখ্যা বেড়েছে। সে সব ক্যাম্পে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও সর্বত্র উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। ফলে জেলার প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা রাজ্যস্তরে খেলার সুযোগ পায় না। জেলার প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের সামনের সারিতে নিয়ে আসতেই এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে। মেদিনীপুরে এমন লিগ হওয়ায় খুশি ক্রিকেটাররাও। পি কে সান্যাল ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পের জার্সি পরে রবিবার দুপুরে মাঠে নেমেছিল রাহুল সেন, অমিত সরকার’রা। তাঁদের মতে, এধরনের টুর্নামেন্ট বেশি হলে জেলা ক্রিকেটের উন্নতি হবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য আশিস চক্রবর্তীর বক্তব্য, “জেলা থেকেও এখন প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা উঠে আসছে। এই ধরনের লিগের ফলে আরও বেশি প্রতিভা খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। তরুণ প্রজন্মও মাঠমুখী হবে।” মাস দুই আগে মেদিনীপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিএবি পরিচালিত ইন্টার ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের (সিনিয়র) প্রথম রাউন্ডের খেলা। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর এই তিনটি জেলাকে নিয়ে হয় প্রথম রাউন্ডের খেলা। সর্বাধিক পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে পশ্চিম মেদিনীপুর। দ্বিতীয় রাউন্ডে বহরমপুরে উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং পরে হাওড়ার সঙ্গে খেলায় হেরে যায় পশ্চিম মেদিনীপুর।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির এক সদস্য বলেন, “আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে না তুললে জেলার ছেলেরা পিছিয়ে পড়বে। উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহকুমাশাসক (সদর) এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “আইপিএলে বাংলার বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার বিভিন্ন দলে খেলছে। কে বলতে পারে এ জেলারই কোনও প্রতিভাবান ক্রিকেটারের মধ্যে লুকিয়ে নেই ভবিষ্যতের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মনোজ তেওয়ারি’রা।” অমিতাভবাবুর পরামর্শ, “প্রতিভা খুঁজলেই হবে না। আরও ভাল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই জেলা ক্রিকেটের উন্নতি হবে।” এ দিকে, জেলার কিছু ক্লাব লিগে খেলার সুযোগ না পাওয়ায় বেশ ক্ষুব্ধ। উদ্যোক্তাদের অবশ্য বক্তব্য, এটি আমন্ত্রণমূলক লিগ হওয়ায় সব ক্লাবকে সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। |