‘অপারেশন গেইল’-এর লক্ষ্যেই পিচ পাল্টে গেল ৪৮ ঘণ্টায়
ম্যাচ শুরুর দু’দিন আগে থেকে শুরু হয়েছিল ‘অপারেশন গেইল’। এবং রবিবাসরীয় রাঁচিতে সেই ‘অপারেশন’ সম্পূর্ণ ভাবে সফল হওয়ার পর গম্ভীরদের মুখে সাফল্যের হাসি, বেঁচে থাকার হাসি।
দু’ দিন আগেও ঠিক ছিল না রাঁচির উইকেট এত স্লো হবে। নাইট অধিনায়কের ঘনিষ্ঠ এক জন দু’দিন আগে উইকেট দেখতে এসে চমকে যান। ফ্ল্যাট উইকেট, বল ব্যাটে আসায় কোনও সমস্যা নেই। এক কথায় স্ট্রোক প্লেয়ারের স্বর্গ। আরসিবি-র ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’, মানে গেইল-কোহলি-ডে’ভিলিয়ার্স-কে এই পিচে আটকানো যাবে? ঝাড়খণ্ড ক্রিকেট সংস্থার এক সূত্রের কথায়, এর পরপরই নাইট ম্যানেজমেন্টের তরফ থেকে উইকেট নিয়ে বিশেষ ‘মেসেজ’ আসে। এবং শুরু হয়ে যায় ‘অপারেশন গেইল’।
কী ভাবে?

রাঁচিতে কোহলির আউটের ছবি তুলেছেন প্রশান্ত মিত্র
শেন ওয়ার্ন এক বার অস্ট্রেলিয়া সিরিজের সময় রসিকতা করে বলেছিলেন, ‘ভারতে যে ধরনের উইকেট হচ্ছে, সে সব পিচে সেরা প্লেয়ার হবে নাদাল। ও তো ক্লে কোর্টের রাজা।’ ঘটনা হল, রাঁচির এই উইকেটেও মাটির পরিমাণ অনেকটা বেশি। তার সঙ্গে গত কাল রাত পর্যন্ত চলেছে জল দেওয়া। সব মিলিয়ে একটু চ্যাটচ্যাটে হয়ে যাওয়া উইকেটে বল থমকে এসেছে। স্ট্রোক প্লেয়াররা টাইমিং করতে পারেনি। গেইলের মতো ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যানেরও স্ট্রাইক রেট নেমে গিয়েছে একশোর নীচে। যা নিয়ে ভালই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বেঙ্গালুরু শিবিরে। বিরাট কোহলি যেমন ম্যাচ শেষে টিভি-তে বলছিলেন, “এই উইকেটটা খুব স্লো। স্ট্রোক খেলার পক্ষে একেবারেই আদর্শ নয়।” সাংবাদিক সম্মেলনে এসে আরসিবি-র বাঁ হাতি স্পিনার মুরলী কার্তিক বলে গেলেন, “উইকেটটা দেখে এক রকম মনে হয়েছিল, কিন্তু ব্যবহার করল অন্য রকম।”
কোহলিরা যে উইকেটের চরিত্র ঠিক মতো বুঝতে পারেননি, তা বোঝা যাচ্ছে তাঁদের টিম নির্বাচন নিয়ে। কার্তিকের সঙ্গে এক জন স্পিনার না খেলিয়ে বাড়তি পেসার খেলায় বেঙ্গালুরু। সেই পেসার, অভিমন্যু মিঠুন চার ওভারে দিয়ে গেলেন ৩৭ রান। এবং শুধু আরসিবি নয়, কেকেআরের পক্ষ থেকে জাক কালিসও বলে গেলেন, উইকেট চরিত্র সম্পূর্ণ বুঝে ওঠা তাঁদের পক্ষেও সম্ভব হয়নি। বলে দিলেন, “সেনানায়কেকে আমরা বাড়তি স্পিনার হিসাবে খেলিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু ব্যাপারটা আমাদের কাছে একটা জুয়ার মতো ছিল। সেটা ঠিকঠাক ক্লিক করে গেল।”

রাঁচিতে বেহাল ব্যাটসম্যানরা
সঙ্গে আরও সংযোজন, “এটা টি-টোয়েন্টির আদর্শ উইকেট না। এই পিচে ব্যাটিং একেবারেই সহজ নয়। ভেরিয়েবল বাউন্স ছিল তাই পেসার বা স্পিনার, কারও মোকাবিলা করাই খুব সহজ ছিল না। তবে পারফেক্ট উইকেট হয়তো বিশ্বের কোনও মাঠেই পাওয়া যায় না।” তার আগে বাংলার মনোজ তিওয়ারি বলে গিয়েছেন, “উইকেটটা স্লো ছিল। ঠিক মতো শট খেলা যাচ্ছিল না সেটাও ঠিক। কিন্তু তবু বলব, এ রকম উইকেটই আমাদের পছন্দ।”
পছন্দ বটে। কিন্তু তাতে বিতর্ক এড়ানো যাচ্ছে কোথায়? ইতিমধ্যেই বলাবলি শুরু হয়েছে যে, রাঁচির উইকেট আর যা-ই হোক টি-টোয়েন্টির পক্ষে মোটেই আদর্শ নয়। ইডেন কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায় যেমন। অতীতে ইডেনে স্লো টার্নার বানানোর জন্য বহু বার তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। রাঁচির উইকেট দেখে প্রবীরবাবুও কিন্তু শুনিয়ে রাখলেন, “এর পর নিশ্চয়ই ইডেনের উইকেট নিয়ে কথাবার্তা বন্ধ হবে। এত দিন সব উইকেট নিয়ে যাবতীয় সমালোচনা আমাকেই সহ্য করতে হত। রাঁচিতে ওটা কী উইকেট হয়েছে? এত জঘন্য টি-টোয়েন্টি ম্যাচ তো ইডেনেও হয়নি!”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.