হাতে লাঠি, মাথায় হ্যাট, গায়ে মেয়রের ব্যাজ লাগানো জ্যাকেট। গুরুগম্ভীর মুখে বড়দের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে যাচ্ছে মিনেসোতার ডরসেট শহরের ৪ বছরের মেয়র। রবার্ট টাফ্টস।
হ্যাঁ, ডরসেটের নতুন মেয়র এখনও কিন্ডারগার্টেনও পেরোয়নি। কিন্তু তাতে কী? শহরের ২২ জন বাসিন্দা তাকে রীতিমতো আনুষ্ঠানিক ভাবে বেছে নিয়েছে। কিন্তু ওইটুকু বাচ্চা শহর চালাবে কী ভাবে? পড়াশোনাও তো সে জানে না? বাসিন্দাদের অবশ্য এ কথায় ঘোরতর আপত্তি। পড়াশোনা না জানুক, মুখ তো আছে, কথা তো বলতে পারে বক্তব্য বাসিন্দাদের। তাঁদের কথায়, শিশু তো নয়, রবার্ট একেবারে “আগুনের গোলা।” চার পুরুষ ধরে ডরসেটে থাকেন ক্যাথি শ্মিট। বললেন, “ও অসাধারণ। দারুণ কথা বলতে পারে। আপনি ভাবতেও পারবেন না, পুরো কথার ফুলঝুড়ি।” |
মেয়রের বেশে রবার্ট টাফ্টস। ছবি: পিটিআই
|
মেয়রের আরও অনেক গুণ আছে। ভাল গান গাইতে পারে রবার্ট। নাচেও সেরা। সব সময় হাতে একটা লাঠি। সাবধানে কী ভাবে রাস্তা পার করতে হয়, ওর কাছে থেকে সেটাও শেখার। স্থানীয় বাসিন্দারাই এ সব গুণের কথা জানালেন। খুব ভাল মাছ ধরতে পারে রবার্ট। ঠিক কী ভাবে মাছের চারা দিতে হয়, আরও খুঁটিনাটি যা কিছু, সব নখদর্পণে। ‘টেস্ট অফ ডরসেট’। এই উৎসবেই লটারি করে বেছে নেওয়া হয় শহরের নয়া মেয়র। গত বছর লটারিতে নাম উঠেছিল রবার্টের। প্রচারেও বিশেষ খরচ নেই। মাত্র ১ ডলার খরচ করে বিশেষ টুপি বানাতে হয় প্রার্থীদের। তার পর লটারি। মেয়র হওয়ার জন্য ডরসেটে থাকতেও হবে না। অতীতে এমন নজিরও রয়েছে। পাঁচ বছরের একটি বাচ্চা ডরসেটের মেয়র হয়েছিল। শিকাগো থেকে ডরসেট শাসন করত সে।
মেয়র হওয়ার জন্য অবশ্য বিশেষ খাটাখাটনি নেই। খুব ছোট্ট জায়গা ডরসেট। আমেরিকার মানচিত্রে ছোট্ট একটা বিন্দু। বহু বছর আগেই ডরসেট খাতায় কলমে তার শহর তকমা হারিয়েছে। তাই সাম্মানিক পদ থাকলেও, মেয়রের তেমন কাজ নেই। ডরসেটের বাসিন্দাদেরও শহর সম্মান খোয়ানোয় কোনও দুঃখ নেই। ডরসেটের আনাচে কানাচে অসংখ্য রেস্তোরাঁ। তাই তাকে বলা হয় “বিশ্বের রেস্তোরাঁ বাজধানী।” সেই খ্যাতিতেই গর্বিত ডরসেটবাসী ও তাদের ৪ বছরের মেয়র। |