বিকেলের দমকা কালবৈশাখিতে থমকে গেল জেলার জনজীবন। বহু গাছ উপড়ে পড়ায় রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে রইল বেশ কিছুক্ষণ। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় দুর্গাপুরের সিটিসেন্টার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎহীন রইল রাত পর্যন্ত। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা কাজে নেমে পড়লেও রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ হঠাৎই দমকা ঝড় শুরু হয় দুর্গাপুরে। সঙ্গেসঙ্গেই শুরু হয় বৃষ্টিও। বৃষ্টি থামলে দেখা যায়, শহরের বহু বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে রাস্তার পাশে বাঁশের অস্থায়ী কাঠামো। সিটি সেন্টারের প্রায় সব রাস্তায় গাছ পড়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। সরকারি কলেজের সামনের রাস্তাটিও গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া জাতীয় সড়কের ডিভিসি মোড়ের ট্রাফিক পুলিশ পোস্টটিও উপড়ে পড়ে। এমএএমসি বি-২ বাজার বস্তি এলাকার একটি অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের টিনের ছাউনি উড়ে গিয়ে পড়ে পাশের দু’টি বাড়িতে। |
আতঙ্কিত ওই বাড়ির শঙ্কর পাত্র, কল্পনা পাত্ররা বলেন, “যখন টিনের চালটা উড়ে এসে পড়ল ভয়ে হাত-পা কাঁপছিল। খুব বড় বিপদ থেকে বেঁচেছি।” ওই অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের পড়ুয়ার সংখ্যা ৯৪। মাথার চাল উড়ে যাওয়ায় এ বার কোথায় ক্লাস করবে তারা তা নিয়ে চিন্তিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ দিকে বিদ্যুতের তারে গাছ পড়ে যাওয়ায় ডিপিএলের বন্টন এলাকার সর্বত্র একসঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যায়। তবে পরে ঝড়-বৃষ্টি থামলে ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ ফিরতে থাকে। ঘন্টা খানেকের মধ্যে অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ চলে আসে। কিন্তু বিধাননগর ও সিটি সেন্টারের বিস্তীর্ণ অংশে বিদ্যুৎ ফেরেনি রাত পর্যন্ত। ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজে নেমে পড়েছেন। কিন্তু সিটি সেন্টারে বহু গাছের ডাল বিদ্যুতের তারে পড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামলাতে ব্যাপক বেগ পেতে হয়। এ দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে মহকুমার বেশ কিছু এলাকায় ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
|
আসানসোল, রানিগঞ্জেও বিকেলেই আঁধার নেমে যায় এ দিন। ঝড়ের বেশ কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকে এলাকা। অন্ডালের উখড়া পাঠকপাড়ায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। অন্ডালের মাধাইগঞ্জ রাস্তায় খান্দরা কলেজের সামনেও গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। পাণ্ডবেশ্বরেও শনি ও রবি দু’দিনই ঝড় হয়। এতে প্রায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচটা বিদ্যুতের খুঁটিও। এর জেরে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল এলাকা। পাণ্ডবেশ্বরের বিডিও নিশান্ত মুখোপাধ্যায় জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের আপাতত ত্রিপল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বর্ধমানের বেশ কিছু অংশেও ঝড়-বৃষ্টি হয় এ দিন বিকেলে। শহরের নতুনগঞ্জ ছাড়াও ইদিলপুর, সদরঘাট, গাঙপুর এলাকাতেও কয়েক ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি হয়। তবে বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। |