ভোটের আগে চোখ সংগঠনেও
মন্ত্রিসভার রদবদলেও গুরুত্ব বাড়ছে রাহুলের
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের চার বছর পূর্ণ হতে আর মাত্র দশ দিন বাকি। তার মধ্যেই সংগঠন ও সরকারের রদবদল সেরে ফেলতে সক্রিয় সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, কোনও অঘটন না ঘটলে লোকসভা ভোটের আগে মনমোহন সিংহ সরকারে সম্ভবত এটাই শেষ রদবদল। এবং এই রদবদলের হাত ধরেই প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি কার্যকরী সংগঠন গড়ে তোলার ব্যাপারেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন মা-ছেলে।
কংগ্রেসের অন্দরেই প্রবল চাপের মুখে কাল রাতে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন রেলমন্ত্রী পবন বনশল এবং আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার। আজ ওই দুই মন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী সি পি জোশী এবং টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বলকে। তার পর দলের শীর্ষ সারির নেতা মন্ত্রীদের সঙ্গে দশ জনপথে ধারাবাহিক বৈঠক করেন সনিয়া-রাহুল। কাল ফের এ নিয়ে কথা বলতে কংগ্রেস কোর গ্রুপের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
বস্তুত কর্নাটকের ভোটের পর এমনিতেই সংগঠনে রদবদল করার কথা ছিল রাহুলের। রাজ্যওয়াড়ি প্রদেশ সভাপতি পরিবর্তন ও কংগ্রেস কেন্দ্রীয় সংগঠনের মুখপাত্রদের নতুন টিম তৈরির মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়া শুরুও করে দিয়েছিলেন তিনি। তার মধ্যেই দুই মন্ত্রীর ইস্তফার পর মন্ত্রিসভার রদবদল রাহুলের সামনে আরও একটি নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, সে দিক থেকে এই প্রথম মন্ত্রিসভার রদবদলে আগের থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে রাহুলের মতামত। বস্তুত রাহুলের ইচ্ছাতেই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে গতকাল সীড্ডারামাইয়াকে মনোনীত করা হয়েছে। কংগ্রেসে তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের দাবি, এ বার মন্ত্রিসভার রদবদলেও তুলনামূলক ভাবে রাহুলের মতামতই বেশি গুরুত্ব পাবে।
ঘটনা-চক্র
১২:৪৫

সাংবাদিক বৈঠকে আত্মপক্ষ সমর্থন অশ্বিনীর।
১টা
প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি রাজনাথের।
২টো
দুই মন্ত্রীর ইস্তফা গৃহীত, জানাল রাইসিনা হিলস।
২:১০
সি পি জোশী ও কপিল সিব্বল যথাক্রমে রেল ও আইনের অতিরিক্ত দায়িত্বে, ঘোষণা
৫টা

দশ জনপথে সনিয়া, রাহুলের সঙ্গে বৈঠক করতে এলেন আহমেদ পটেল।
৫:৩০

সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে বৈঠকে গুলাম নবি আজাদ ও সুশীলকুমার শিন্দে।
কংগ্রেসের এই নেতাদের বক্তব্য, এর নেপথ্যে দু’টি কারণ রয়েছে। প্রথমত গত ন’বছরে ইউপিএ শাসনে এই প্রথম মনমোহনের সঙ্গে সনিয়ার যথেষ্ট দূরত্ব বাড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ওই নেতাদের সূত্রে বলা হচ্ছে, কংগ্রেস সভানেত্রী এতটাই ক্ষুব্ধ যে, ক’দিন আগে পবন-অশ্বিনীর ঘটনা প্রসঙ্গে দলের কোর গ্রুপের এক বৈঠকে সনিয়া বলেন, ‘বুঝতে পারছি না কী করব! এ ভাবে কি সরকার চলে’? বস্তুত মনমোহন-সনিয়ার মতান্তর যে কোন পর্যায়ে, তা আইন মন্ত্রক থেকে অশ্বিনীর ইস্তফা নিয়ে টানাপোড়েনেও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া মন্ত্রিসভার গত রদবদলে মনমোহনের মতকে গুরুত্ব দিয়েই পবন ও অশ্বিনীকে বাড়তি মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। দলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য, রদবদলে রাহুলের মতের গুরুত্ব বাড়ার দ্বিতীয় কারণ হল, লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এখন নিজের টিম তৈরি করতে চাইছেন রাহুল। যাতে ভবিষ্যতে কাজ করতে সুবিধা হয়।
কিন্তু কী হতে চলেছে সেই টিমের স্বরূপ?
সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ছবি এখনও পাওয়া যায়নি। তবে কংগ্রেস নেতাদের একটি অংশ বলছেন, সি পি জোশীকে পাকাপাকি ভাবে রেল মন্ত্রকে আনা হতে পারে। পরিবর্তে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকে নতুন মুখ আনতে পারেন সনিয়া-মনমোহন। বস্তুত আইন এবং রেল মন্ত্রকের পাশাপাশি সার ও রসায়ন মন্ত্রকেও এখন পূর্ণ সময়ের কোনও মন্ত্রী নেই। মন্ত্রিসভা থেকে ডিএমকে সমর্থন প্রত্যাহারের পর ওই মন্ত্রকে নতুন কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। রদবদলের সময় সেই শূন্যস্থান পূরণ করা হবে। এ ছাড়াও লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে মন্ত্রিসভা থেকে তিন-চার জন মন্ত্রীকে সংগঠনে নিয়ে আসতে পারেন সনিয়া-রাহুল।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, সরকার ও কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সংগঠনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজ্যওয়াড়ি সংগঠনও সাজাতে চাইছেন রাহুল। এ বছরের শেষ দিকে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ে নির্বাচন রয়েছে। সে জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে মধ্যপ্রদেশের প্রচার কমিটির দায়িত্ব দিয়ে পাঠাতে পারেন রাহুল। আবার দলের কেন্দ্রীয় সংগঠন থেকে সরিয়ে ছত্তীসগঢ়ে একই ধরনের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগীকে। এমনকী শাকিল আহমেদকে সরিয়ে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে একজন দাপুটে নেতাকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বও রাহুল দিতে পারেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। কংগ্রেসের এক নেতা জানান, রাজ্যওয়াড়ি সমীক্ষা চালিয়ে এই সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এখন রাহুলের ‘ম্যান ফ্রাইডে’ হলেন গুজরাতের কংগ্রেস নেতা মধুসূদন মিস্ত্রী। কর্নাটক ভোটে প্রার্থী বাছাইয়েও এই নেতার বড় ভূমিকা ছিল। এমনকী রাহুলের নির্দেশে রাজ্যওয়াড়ি সফর করে স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে লোকসভা ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও শুরু করে দিয়েছেন মধুসূদন।
কংগ্রেস ও সরকারের সূত্রের বক্তব্য, সম্ভবত ১৭ বা ১৮ মে নাগাদ মন্ত্রিসভা ও সংগঠনে রদবদল হতে পারে। তার আগে আপাতত টিম সাজানোর জন্য আগামী কয়েক দিনে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আরও কয়েক দফা বৈঠক করবেন সনিয়া-রাহুল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.