খান্দরা পাইপ বসেছে ঘটা করে,
ভরসা তবু কেনা জলই
ল নেই। অথচ তার জন্য উদ্যোগের অন্ত ছিল না। কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে গিয়েছে। কার্যত জল ছাড়াই দিন কাটাতে হচ্ছে খান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের। তিন কিলোমিটার দূর থেকে জল নিয়ে এসে অথবা কিনে মেটাতে হচ্ছে পানীয় জলের প্রয়োজন।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ছোড়া জলাধার (ওভারহেড ট্যাঙ্ক) থেকে সিমেন্টের পাইপলাইন পেতে জল আনার ব্যবস্থা করেছিল। বিভিন্ন জায়গায় সিমেন্টের পাইপলাইন কেটে ১৬টি কলের খুঁটি পুঁতে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাতে খানিকটা হলেও মিটেছিল জলের সমস্যা। অর্ধেক এলাকায় কখনও সখনও জল পড়তও বটে। কিন্তু তার পরেই হল সমস্যা। পুরো এলাকার জল সমস্যার সমাধানের জন্য পাতা হল প্লাস্টিকের পাইপলাইন। তাতেই তৈরি হয়েছে বিপত্তি। সমস্যা বাড়ল বই কমল না।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে সিঁদুলির ২ নম্বর মাঝিপাড়ায় দু’টি, কোলপাড়ায় দু’টি, দিঘির বাগান মিঞা সেন্টারে দু’টি, পাঁচ নম্বর কোড়াপাড়া, মাঝিপাড়া এবং হাটতলায় একটি করে, বাউড়িপাড়ায় তিনটি, তেলীপাড়া ও ঘোষপাড়ায় চারটি করে কলের খুঁটি পোঁতা হয়েছিল। তাতে প্রথমদিকে সপ্তাহে এক দিন বা দু’দিন করে, তার পর মাঝে মাঝে জল পড়ত। অন্য দিকে, পুরনো গ্রুপ পাড়া, লাল ধাওড়া, লঙ্কাপুরী ভুঁইয়াপাড়া, জিপিএল সেন্টার, সিঁদুলি চব্বিশ পরগণা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ায় হয়নি। ২০১০ সালে আবার নতুন করে পুরো এলাকায় প্লাস্টিক পাইপলাইন পাতা হয়। কিন্তু একটিও কল পোঁতা হয়নিা। ফলে মাস ছয়েক ধরে ওই পুরনো কলগুলিতে আর জলই পড়ছে না।
দিঘির বাগানের বাসিন্দা মহম্মদ নৌসাদ, তেলীপাড়ার অজিত বারুই, বাউড়িপাড়ার সুখেন বাউড়িরা জানান, আগেও জলকষ্ট ছিল। এখন তা আরও তীব্র হয়েছে। সারা বছর কুয়োর জলে ঘরের অন্যান্য কাজ হয়। এছাড়া সাইকেল অথবা মোটরবাইকে করে তিন কিলোমিটার দূরে ডায়মন্ড মোড় থেকে পরিস্রুত পানীয় জল নিয়ে আসতে হয়। এলাকার সম্পন্ন পরিবারেরা আট থেকে দশ টাকা দরে ১৫ কিলোগ্রাম ওজনের ডালডার জারে জল কেনেন।
এলাকার বাসিন্দা, সিপিআইয়ের পঞ্চায়েত সদস্য তথা এআইওয়াইএফের জেলা সম্পাদক রাজু রাম জানান, আগে পুরনো কলে সপ্তাহে এক দু’দিন করে জল মিলত। তাঁর দাবি, ছ’মাস ছোড়া জলাধার থেকে জল পাঠানো হচ্ছে না। খান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুকিয়া মাঝি জানান, প্রতি বছরের মতোই তিন মাস আগে বিডিওকে জলের ব্যবস্থা করার জন্য লিখিত আবেদন জানানো হয়েছিল। কোনও সাড়া মেলেনি। তবে ইসিএল ট্যাঙ্কারে করে এলাকার কুড়িটি কুয়োতে প্রতিদিন জল ভরে দিয়ে যাচ্ছে। অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সিপিএমের শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকায় সার্বিকভাবে জল সমস্যা মেটানোর জন্য রাজ্যসভার সাংসদ রামচন্দ্র সিংহ ২৫ লক্ষ টাকা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে দিয়েছে। সেই টাকায় প্ল্যাস্টিকের পাইপলাইন বসানো ছাড়া আর কিছু হয়নি। জল সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। বারবার জানতে চাইলেও এবিষয়ে কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি।” জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বিকাশ আচার্য জানান, আসানসোলের কালাঝরিয়া থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরে ছোড়া জলাধারে জল আসে। এই জলাধার থেকে উখড়া, শঙ্করপুর, ছোড়া, চিঁচুড়িয়া ও খান্দরা পঞ্চায়েত এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। এই জলের পরিমাণ কম হওয়ায় বেশ কিছু জায়গায় জল সঙ্কট তীব্র হয়েছে। পাণ্ডবেশ্বরের অজয় নদের জল নিয়ে একটি জল প্রকল্প করা হচ্ছে। সেই জল অন্যান্য এলাকার সঙ্গে শঙ্করপুর ও উখড়ায় সরবরাহ করা হবে। তার পরেই এই প্লাস্টিক পাইপ লাইন দিয়ে জল পাওয়া যাবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.