জমি দখল হয়ে থাকায় মালদহে যুব আবাস ও অত্যাধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ওই প্রকল্পের জন্য ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়। সরকারি জমি বেদখল হয়ে থাকার কাজ শুরু হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতি জেলা প্রশাসনের তরফে ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া আর্জি জানানো হচ্ছে।
মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমার বলেন, “ওই জমি দখল হয়ে বস্তি বসেছে। তা না সরিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। আমি এলাকাটি দেখে এসেছি। বহু পরিবার সেখানে বসবাস করেছে। পুরসভার চেয়ারম্যান তথা পর্যটন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছি। এলাকা খালি করিয়ে স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কাজ শুরু করা হবে।” এই প্রসঙ্গে পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “ওই এলাকায় বসবাসকারীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এলাকাটি খালি না করলে প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে না।” |
এই সেই জমি। মালদহে মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। |
মালদহ জেলা ক্রীড়া সংস্থা স্টেডিয়াম লাগোয়া দক্ষিণ পাশে প্রায় ৮ একর জমিতে অত্যাধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও যুব আবাস তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যে সরকার। গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যে সরকার ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করে। জেলা প্রশাসনের কাছে টাকাও চলে আসে। টাকা আসার পরে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও জমি জটে আটকে পড়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই ৮ একর জমিটি খাস জমি। ২০১১ সালে অগষ্ট মাসে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের পক্ষ থেকে রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতরকে জমিটি হস্তান্তর করা হয়। সেই সময় শর্ত দেওয়া হয়, আগামী তিন বছরের মধ্যে স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও যুব আবাস গড়ে না উঠলে জমিটি ফিরিয়ে নেওয়া হবে। রাজ্য স্পোর্টস কাউন্সিলের সদস্য শান্তনু সাহা বলেন, “মেদিনীপুর অরবিন্দ স্টেডিয়ামের আদলে কমপ্লেক্স তৈরি করা হবে। ফুটবল মাঠকে ঘিরে ৪০০ মিটার ট্র্যাক থাকবে। সেই সঙ্গে তৈরি হবে যুব আবাস। সেখানে ২০টি ডবল বেডের ঘর থাকবে। দুটি প্রশাসনিক দফতরের জন্য ঘর, মাল্টি জিম, কনফারেন্স রুম তৈরি হওয়ার কথা।”
বাসিন্দারা জানান, বর্ষায় মহানন্দা নদী ফুলে ফেঁপে উঠলে নদীর ধারে বসবাসকারী বাসিন্দারা কয়েক মাসের জন্য সেখান থেকে সরে এসে ওই জমিতে বসবাস করতেন। ফের জল নামলে তাঁরা নদীর ধারে চলে যেতেন। কিন্তু তিন বছর ধরে তাঁরা আর পুরানো জমিতে ফেরেননি। স্থানীয় পবন ঋষি, রতন চৌধুরীরা বলেন, “আমরা দখল করতে চাই না। পুনর্বাসন বা অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা করলেই চলে যাব। প্রশাসন কোনও রকম ব্যবস্থা না করলে তো আমাদের পরিবার নিয়ে রাস্তায় বসে থাকতে হবে।” |