শয্যাসংখ্যা বাড়াতে ভবন তৈরির কাজ বন্ধ |
ঠিকাদারের কাজ নিয়ে সমস্যায় শয্যাসংখ্যা বাড়ানোর জন্য ক্যানিং হাসপাতালে নতুন ভবন তৈরির কাজ বন্ধ দু’মাস ধরে। চালু হয়নি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানও। রোগী ও তাঁদের আত্মীয় -স্বজন এ নিয়ে প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগ তুলছেন। ক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজনও।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি ক্যানিং স্পোর্টস কমপ্লেক্স মাঠে এক সভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, ওই হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ১০০ থেকে বাড়িয়ে ১৫০ করা হবে। সেই মতো হাসপাতাল চত্বরেই দোতলা ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু দু’মাস ধরে কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। এখনও হয়নি প্লাস্টার, বসেনি জানলা -দরজা। বিদ্যুতের লাইনের কাজেও হাত পড়েনি।
মাতলা নদীর উপরে সেতু তৈরি হয়ে যাওয়ার পর থেকে ক্যানিং হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। বাসন্তী, গোসাবা -সহ সুন্দরবনের বহু প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ এখন সরাসরি ওই সেতু পেরিয়ে হাসপাতালে সহজেই চলে আসতে পারেন। তা ছাড়া, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিও অধিকাংশ সময় রোগীকে মহকুমা হাসপাতালে ‘রেফার’ করছে। ফলে, আগের তুলনায় রোগীর চাপ বেড়ে গিয়েছে হাসপাতালে। রোগীর তুলনায় হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা কম থাকায় অনেক সময়েই এক বিছানায় দু’জন রোগীকে রাখা হয়। কখনও কখনও স্থানাভাবে রোগীর রাখা হয় মেঝেতেও। |
হাসপাতালের অসমাপ্ত ভবন।—নিজস্ব চিত্র। |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই ঘোষণার পরে খুশি হয়েছিলেন এলাকার মানুষ। কয়েক মাস আগে পূর্ত দফতর নতুন বাড়তি শয্যার জন্য ভবন তৈরির কাজও শুরু করে দেয়। কিন্তু সেই কাজ কেন বন্ধ হয়ে গেল? এ নিয়ে হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সরকার কোনও কথা বলতে চাননি।
ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “কী কারণে হাসপাতালের নতুন ভবন তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে গেল তা ঠিক বলতে পারব না। তবে টেন্ডার নিয়ে একটা সমস্যা হচ্ছে বলে শুনেছি। আমি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
ক্যানিংয়ের পূর্ত দফতরের সাব -অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌমিত্র দাস বলেন, “যে ঠিকাদার সংস্থাকে ওই ভবন তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছিল, তারা ঠিকমতো কাজ করছিল না। তাই তাদের বাদ দিয়ে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে। টেন্ডার ডাকা হবে। এ সবের জন্য কিছুটা সময় লাগছে।”
কিন্তু ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানই বা চালু হল না কেন?
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছিল গত মার্চ মাসে। সেই মতো স্বাস্থ্য দফতর টাকা অনুমোদন করে পূর্ত দফতরকে দেয়। কিন্তু কয়েক দিন আগে পূর্ত দফতর চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, পরিকাঠামোগত কারণে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খোলা সম্ভব নয়। সৌমিত্রবাবু বলেন, “ওই ওষুধের দোকান তৈরিতে পরিকাঠামোগত কিছু ত্রুটি -বিচ্যুতি রয়েছে। আমরা সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠে কী ভাবে দ্রুত কাজ শুরু করা যায় তা দেখছি।” নতুন ভবন এবং ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান দ্রুত চালুর আশ্বাস দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম মালাকারও।
রোগী ও তাঁদের আত্মীয় -স্বজনেরা মনে করছেন, সমস্যা মেটাতে প্রশাসন আরও কিছুটা তৎপর হলে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসার পরিষেবার মান বাড়বে। |