কেউ পুকুরে লাফিয়ে উদ্ধারকাজে নেমেছিলেন। কেউ বা থানায় ফোন করে, পুলিশ আসার আগেই ছোটেন হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুকুরে স্নান করতে নেমে ডুবে মৃত্যু হল তিন বালিকার। ঘটনাটি ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলা থানার লেনিনগড়ে। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম প্রিয়া কর (৯), প্রিয়া ঘোষ (৯) এবং শ্রেয়া রায় (১০)। তারা একে অপরের প্রতিবেশী ও বন্ধু।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই তিন জনের কেউই সাঁতার জানত না। শ্রেয়া লেনিনগড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল এবং বাকি দু’জন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ দিন রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে তাদের স্কুল বন্ধ ছিল। সারা সকাল একসঙ্গে খেলার পরে দুপুর দেড়টা নাগাদ তিন জনেই স্নান করতে নামে স্থানীয় ওই পুকুরে। এর পরেই কোনও ভাবে পা হড়কে তারা তলিয়ে যায় জলের নীচে।
সেই সময়ে পুকুরে স্নান করছিলেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। তিনিই প্রথম জলের নীচে একটি বালিকাকে দেখতে পান। তাঁর চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। খোঁজ শুরু হয় তিন জনের। এর পরে জলে নেমে একে একে তিন বালিকাকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই তিন জনের।
স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা বলেন, “তিনটি পরিবারই খুব গরিব। এক জনের বাবা ভ্যান চালান। তিনটি বাচ্চাই খুব মিশুকে ছিল। পাড়ার সকলেই ওদের খুব ভালবাসতাম। তিন জনের একসঙ্গে এ ভাবে মৃত্যু কেউই মানতে পারছি না।” এ দিনের ঘটনার পরে শোকের ছায়া নামে তিনটি পরিবারে। পাশাপাশি তিনটি বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় মানুষ। প্রিয়ার বাবা রমেশ কর বলেন, “ওদের তিন জনের মধ্যে খুব ভাব ছিল। স্কুল ছুটি থাকায় সকাল থেকেই খেলছিল ওরা। অন্য দিন ওরা কলের জলে স্নান করত। আজ কেন যে পুকুরে নামতে গেল!” খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে নিউ ব্যারাকপুর ফাঁড়ির পুলিশ। মৃতদের বাড়ি যান স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। পরিবারগুলির জন্য অর্থ সাহায্যর ব্যবস্থাও হয়। |