বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর টি টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান যে টিমের হয়ে খেলেন, সেই টিমকেই কিনা দেখতে হল বিপক্ষ ব্যাটসম্যানের সাইক্লোনের মতো ইনিংস। কিংস ইলেভেন পঞ্জাব ম্যাচে ডেভিড মিলারের ইনিংসের জ্বর এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ফিরোজশাহ কোটলায় দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগেও তাই আরসিবি-র ক্রিকেটারদের কথায় ঘুরেফিরে আসছেন মিলার।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে যখন বেঙ্গালুরুর জয় প্রায় নিশ্চিত, সেখান থেকে মাত্র পাঁচ ওভারে একশোর উপর রান তুলে ম্যাচ বের করে নেন মিলার। ৩৮ বলে তাঁর অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস প্রসঙ্গে আরসিবি-র বাঁ-হাতি স্পিনার মুরলী কার্তিক বলছেন, “পুণে ম্যাচে গেইলের ৩০ বলে করা সেঞ্চুরিটা ডাগআউট থেকে দেখেছিলাম। আর মিলার যখন সেঞ্চুরি করল, তখন আমিই বল করছিলাম। বোলার হিসেবে এটুকুই বলতে পারি যে, বল করি বা স্রেফ দর্শক হিসেবে মাঠের বাইরে থাকি, এ রকম একটা ইনিংস দেখার অনুভূতি একই রকম হয়। খুব কষ্ট হয়। কারণ এই ফর্ম্যাটে যা-ই করি না কেন, ব্যাটসম্যানদের হাতে মার খেতেই হবে।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “তার পর ওটা আমাদের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। কারণ আমরা বোলাররাই তো রানটা দিয়েছি। অনিল কুম্বলে এক বার বলেছিলেন না, টি-টোয়েন্টিতে বোলাররা গরুর মতো! মাঝে মাঝে মনে হয় একদম ঠিক বলেছিলেন।” |
পেপসি আইপিএলে আরসিবি-র অ্যাওয়ে ম্যাচের রেখচিত্র একেবারেই স্বস্তির নয়। যা নিয়ে কার্তিকের বক্তব্য, “এটা কেন হচ্ছে, বলা খুব কঠিন। হায়দরাবাদে সুপার ওভারে হারলাম। চেন্নাইয়ে আরপি সিংহ নো-বল করার পর কী হল, এখনও বুঝে উঠতে পারিনি। মুম্বইয়ে প্রচুর রান তাড়া করতে নেমে চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। জয়পুরের ম্যাচটা ক্লোজ ছিল। আর মোহালিতে মিলারের ওই ইনিংসটাই তফাত গড়ে দিল। আইপিএল তো এ রকমই। তবে আমরা এখন যথেষ্ট ভাল জায়গায় আছি। প্লে-অফ নিয়ে আমরা আশাবাদী।”
বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক বিরাট কোহলির হাতে বোলিং বিভাগে প্রচুর বিকল্প রয়েছে। ডেথ ওভারে আরপি, বিনয় কুমার, জয়দেব উনাদকট, রবি রামপলদের ঘুরিয়েফিরিয়ে ব্যবহারও করেছেন কোহলি। কিন্তু জাহির খানের অভাব ভালই টের পাচ্ছে আরসিবি। কার্তিক যেমন বলছেন, “এখন পর্যন্ত জাহিরকে না পাওয়াটা আমাদের জন্য খুব বড় ক্ষতি। তবে মাঠে না নামলেও ড্রেসিংরুমে থেকে ও তরুণদের সব সময় তাতিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বোলারদের। জাহিরের অভিজ্ঞতা তরুণ বোলারদের দারুণ সাহায্য করছে।”
কিন্তু মিলার-আতঙ্কের রেশ কাটিয়ে উঠে আবার জয়ের রাস্তায় ফিরতে পারবে তো আরসিবি? বিশেষ করে দিল্লি যেখানে প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ায় সম্মানরক্ষার মরিয়া লড়াইয়ে ঝাঁপাবে। কার্তিকের কথায়, “এই টুর্নামেন্টে কোনও টিমকে হাল্কা ভাবে নেওয়া যায় না। পয়েন্ট টেবলের উপরে থাকা দলগুলোকে বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে নীচের দিকে থাকা কোনও টিম। স্বপ্নেও তাই কোনও টিমকে আমরা হাল্কা ভাবে নিচ্ছি না।” |