গত বারের দুই ফাইনালিস্টকে হারিয়ে গত সপ্তাহটা আমাদের ভালই গেল। শুধু জেতাটাই আমাদের কাছে বড় ব্যাপার নয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী নিখুঁত খেলে জেতাটা তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তবে কলকাতা ও চেন্নাইকে ঘরে ও বাইরে দুই ম্যাচেই হারানোটা সব কিছুকে ছাপিয়ে যাবে বই কি।
ওয়াংখেড়েতে পরপর দুটো বড় জয় আমাদের নেট রান রেট বাড়িয়ে নিতে বেশ সাহায্য করল। নক আউটে ওঠার দৌড়ের শেষ দিকে নেট রান রেটটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তাই একে আগে থেকে বাড়িয়ে রাখাই তো ভাল। যদিও এখনও অনেকটা পথ এগোতে হবে আমাদের। এখনও তিন সপ্তাহ বাকি। এই তিন সপ্তাহে আমাদের পুণেতে গিয়ে ওদের বিরুদ্ধে খেলতে হবে। রাজস্থান রয়্যালস মুম্বইয়ে এসে খেলবে। তার পর আমরা ধরমশালায় যাব কিংস ইলেভেনের মোকাবিলা করতে। আশা করি, ধরমশালার মনোরম পরিবেশে যখন যাব, তখন আমাদের ছেলেদের আর তেমন কোনও চাপ থাকবে না। ওরা ওই পরিবেশটা চুটিয়ে উপভোগ করতে পারবে। নক আউটে যাওয়ার আগে এটা খুব দরকারও।
যেটুকু পেরিয়ে এলাম, তাতে মনে হচ্ছে, অন্যদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছি। এখন এই দূরত্বটা বজায় রেখে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের আসল কাজ। লক্ষ্যে পৌঁছনো বোধহয় আর তেমন কঠিন হবে না।
ওয়াংখেড়ের আলো নিভে যাওয়াটা বেশ অপ্রত্যাশিত ব্যাপার হলেও নাইটদের বিরুদ্ধে জয়টা প্রত্যাশিতই। আমাদের ওপেনাররা এত ভাল শুরুটা করেছিল যে, তাতেই আমরা অনেকটা এগিয়ে যাই। সচিন ও স্মিথই বড় ইনিংসের ভিতটা তৈরি করে দেয়। মাঝে কিছুটা থমকে গেলেও দীনেশ কার্তিক এসে ফের ঝড় তুলে দিয়ে স্কোরটাকে ১৭০-এ পৌঁছে দিল। এই স্কোরটাই শেষ পর্যন্ত আমাদের প্লাস পয়েন্ট হয়ে ওঠে। ওরা এমন চাপে পড়ে গেল যে, সেই চাপ সামলানো মোটেই সোজা নয়।
চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ১৪০ রানের পুঁজি নিয়ে জেতাটা আরও বেশি কৃতিত্বের। ওই অঞ্চলে ১৭০-১৮০ রান ওঠা কোনও ব্যাপারই নয়। তা ছাড়া চেন্নাই তখন টানা সাতটা ম্যাচ জিতে এসেছে। ওদের ওই দৌড় থামানো বেশ কঠিন। ধোনিদের ব্যাটিং লাইন আপও সাঙ্ঘাতিক। তাই এত অল্প রানে শেষ করে দিয়ে ওদের ওই সাফল্যের গতি থামিয়ে দেওয়াটাকে সাধারণভাবে দেখার কোনও প্রশ্নই নেই। আমাদের বোলিং বিভাগে মিচ-কে ব্যাক আপ দেওয়ার যে ভূমিকা পালন করছে হরভজন ও ওঝা, তারও প্রশংসা করতেই হবে। ডেথ বোলিংয়ে তো মালিঙ্গাই বরাবর আমাদের প্রধান ভরসা। সব মিলিয়ে দল হিসেবে আমরা যথেষ্ট ভাল খেলতে পারছি বলেই এমন ধারাবাহিক জয় নিয়ে এগিয়ে যেতে পারছি।
আসলে এত লম্বা একটা টুর্নামেন্টে দলের সব বিভাগেরই ভাল পারফর্ম করা খুব দরকার। বলা যায় না, যে কোনও দিন আমাদের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হতে পারে। সেই ব্যর্থতা বোলারদেরই পুষিয়ে দিতে হবে। আবার উল্টোটাও হতে পারে। আমাদের দলে এই একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠার ব্যাপারটা রয়েছে ভরপুর। |