পুণে ম্যাচটার পর কেকেআরের কিছু সমর্থককে আবার নড়েচড়ে বসতে দেখছি। কারও কারও মনে সামান্য হলেও আশা ক্রিকেটে তো ওলটপালট হতেই পারে। কেকেআর যদি পরের তিনটে ম্যাচও এ ভাবেই জেতে, আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বা সানরাইজার্সের মতো টিম যদি আচমকা হেরে বসে, তা হলে তো এখনও প্লে-অফের রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
উগ্র সে সব কেকেআর ভক্তদের বলি, এ বারের মতো আশা ছেড়ে দিন। যে কেকেআরকে আজ দেখলেন সেই কেকেআর কালকেও থাকবে, কোনও গ্যারান্টি নেই। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচটার সঙ্গে পুণে ওয়ারিয়র্স ম্যাচে কেকেআরের পারফরম্যান্সে কোনও মিল পেলেন? সামনের রবিবার রাঁচিতে আরসিবি ম্যাচেও তাই একই কেকেআরকে দেখা যাবে, ভাবার কোনও কারণ নেই।
সোজা কথায়, কেকেআর এখন শেষের ম্যাচগুলো জিতে-টিতে বাকি টিমদের প্লে-অফে ওঠা পণ্ড করতে পারে। তার বেশি কিছু নয়। এত জটিল সব ক্যালকুলেশন সামনে থাকলে প্লে-অফ হয় না। |
আর বৃহস্পতিবার কেকেআর সব কিছুতেই দশে দশ পেল, বলতে পারছি না। যেমন ধরুন ব্যাটিং- স্ট্র্যাটেজি। আমি তো বুঝেই পেলাম না মনোজ তিওয়ারিকে সাত নম্বরে নামানোর মানেটা কী? শুনছিলাম মনোজকে নিয়ে ঝামেলা হয়েছে কেকেআর শিবিরে। তার প্রভাবে যদি ওকে সাতে পাঠানো হয়, কিছু বলার নেই। তাতে শেষ পর্যন্ত টিম স্পিরিটেরই বারোটা বাজবে। আরও একটা ব্যাপার দেখলাম, কেকেআর টপ অর্ডার যা ছিল তাই আছে। তফাত একটাই। গৌতম গম্ভীর আজ রান করে দিল। কিন্তু বাকিদের দেখুন। জাক কালিস সেই একশো-একশো কুড়ি স্ট্রাইক রেট নিয়ে খেলল। একই ভাবে আউট হল। মনবিন্দর বিসলা, ওয়েন মর্গ্যান আবার বোঝাল ওদের উপর রোজ রোজ ভরসা করে বসে থাকলে ডুবতে হবে। ইউসুফ পাঠান নিয়ে আর নতুন কী বলব! সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ওর। কেকেআর থিঙ্কট্যাঙ্ক এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে চরম অফ ফর্মে থাকা ইউসুফকে টানা খেলিয়ে টিম কম্বিনেশনেরই দফারফা হয়েছে। আর কিছু হয়নি।
কেকেআর যে আজ দেড়শো পেরোল, তার পুরো কৃতিত্ব আমি দেব দুশখাতে আর মনোজকে। ওরা যদি লোয়ার মিডল অর্ডারে না চালাত, কেকেআর ম্যাচটা হয়তো জিততে পারত না। গম্ভীর হাফসেঞ্চুরি করার পরেও একটা সময় পর্যন্ত মনে হচ্ছিল রানটা ১৩০-এর আশেপাশে হবে। মনোজ-দুশখাতে সেটা হতে দিল না। আর কেকেআরের যা বোলিং, তাতে হাতে দেড়শো বা একশো ষাট থাকলে যে কোনও ব্যাটিংয়ের মহড়া নিতে পারবে।
পুণের তো সেখানে দুই ওপেনার ছাড়া কিছুই নেই। তাই কেকেআরের জেতাটা আমার কাছে আশ্চর্যের নয়। বালাজি ভাল বল করেছে। অ্যারন ফিঞ্চকে নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত টিমের বিপক্ষে যাওয়ায় কালিসও তেড়েফুঁড়ে উঠল। সুনীল নারিনের ওষুধ আর যাই হোক, পুণে ব্যাটিংয়ের পক্ষে বার করা সম্ভব ছিল না। সব ঠিক আছে। কিন্তু এখন আর এ সব নিয়ে কথা বলে লাভ কী?
|