|
|
|
|
থানার পাশেই ব্যাঙ্কে লুঠ, পুলিশ বলছে কর্মীরা জড়িত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
থানার পাশেই ব্যাঙ্ক। আর সেখানেই হানা দিয়ে দু’লক্ষেরও বেশি টাকা নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা।
বুধবার রাতে কোতয়ালি বাজারে ‘মেদিনীপুর কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কে’ ঢুকে আলমারি ভেঙে দুষ্কতীরা টাকা চুরি করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ব্যাঙ্কের এক-দু’জন কর্মীও এতে যুক্ত থাকতে পারেন। না হলে কোন ঘরে আলমারি রয়েছে, আলমারির কোন বাক্সে টাকা রয়েছে, তা তাদের পক্ষে জানা অসম্ভব। ইতিমধ্যে ব্যাঙ্কের কয়েকজন কর্মীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরীর বক্তব্য, “তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ব্যাঙ্কে ঢুকে আলমারি ভেঙে লক্ষাধিক টাকা লুঠের ঘটনা সাম্প্রতিক কালে মেদিনীপুরে ঘটেনি। স্বভাবতই সদর শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। উদ্বেগে রয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও। চুরি গিয়েছে মোট ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৬৪ টাকা। ব্যাঙ্কে একজন নৈশপ্রহরী থাকেন। নাম অমর ঘোষ। অন্য দিনের মতো বুধবার রাতেও তিনি হোটেলে খেতে গিয়েছিলেন। তার আগে সব গেটে তালাও লাগিয়ে দেন। ফিরে এসে তালা খুলে ব্যাঙ্কে ঢুকেই চমকে ওঠেন। দেখেন, যে ঘরে ভল্ট-আলমারি রয়েছে, সেই ঘরের দরজা ভাঙা। ভল্ট খারাপ। তাই নগদ টাকা আলমারিতে একটি বাক্সে রাখা হয়। ওই নৈশপ্রহরীর কথায়, “রাত ৯টা নাগাদ হোটেলে গিয়েছিলাম। ১০টা নাগাদ ফিরে দেখি এই ঘটনা।” |
|
এই দরজা ভেঙেই ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। —নিজস্ব চিত্র। |
যে ঘরে চুরি হয়েছে, তার পাশেই শৌচাগার। শৌচাগারের জানলা খোলা ছিল। দুষ্কৃতীরা ওই জানলা দিয়ে ঢুকেছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রাতেই ব্যাঙ্কে যান কোতয়ালি থানার আইসি সুশান্ত রাজবংশী।ব্যাঙ্কের চারপাশ ঘুরে দেখেন। বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখা যায়, যে ঘরে দুষ্কৃতীরা ঢুকেছিল, তার দরজা ভাঙা। অন্য একটি ঘরে বসে রয়েছেন ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ইন্দুভূষণ মিশ্র, ভাইস চেয়ারম্যান বীরেশচন্দ্র দেব-সহ অন্য কর্মকর্তা এবং কর্মীরা।
ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অনুপকুমার মাইতি রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্যাঙ্কের কয়েকজন কর্মীকে কোতয়ালি থানায় তলব করা হয়। তদন্তের জন্য পুলিশও ফের ব্যাঙ্কে আসে। পুলিশের এক সূত্রে খবর, ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার দুলাল দেব ক’দিন ধরেই আধিকারিকদের জানাচ্ছিলেন, টাকার হিসেব মিলছে না। ব্যাঙ্ক বন্ধের সময় আলমারিতে যে পরিমাণ টাকা থাকছে, পরদিন এসে দেখছেন, তার পরিমাণ কমে গিয়েছে। তাহলে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত? পুলিশও এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। তারা জানিয়েছে, ইতিমধ্যে কিছু সূত্র মিলেছে। তা ধরেই তদন্ত এগোচ্ছে। ব্যাঙ্কের একটি সূত্রে খবর, আলমারিতে খুব বেশি হলে নগদ ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রাখা যায়। তার বেশি নয়। তাহলে কেন ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৬৪ টাকা রাখা হয়েছিল, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকার তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। ব্যাঙ্কের ভাইস চেয়ারম্যান বীরেশচন্দ্র দেব বলেন, “পাশেই থানা। তার মধ্যে ব্যাঙ্কে ঢুকে আলমারি ভেঙে এ ভাবে টাকা চুরি করে নিয়ে পালানোর ঘটনা দুঃসাহসিক। আশা করি, পুলিশ দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করবে।” |
|
|
|
|
|