|
|
|
|
নেই সশস্ত্র জওয়ানও |
থেকেও নেই লাগেজ স্ক্যানার, শিকেয় মেট্রোর নিরাপত্তা |
দীক্ষা ভুঁইয়া |
কোনও কোনও মেট্রো স্টেশনে দু’টি, কোথাও তিনটি প্রবেশপথ। কিন্তু লাগেজ স্ক্যানার রয়েছে একটি মাত্র প্রবেশপথে। ময়দান এবং বেলগাছিয়া মেট্রো স্টেশনে আবার স্ক্যানার বসানো থাকলেও তা কাজ করে না, এ কথা মেনে নিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি স্টেশনের দু’টি প্ল্যাটফর্মে চার জন করে সশস্ত্র আরপিএসএফ থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে সেই বাহিনীও থাকছে না বলে অভিযোগ।
গত বছর অক্টোবর মাসে ধুমধাম করে কলকাতা মেট্রোর ২৩টি স্টেশনের ২৩টি পয়েন্টে বসানো হয় লাগেজ স্ক্যানারগুলি। কিন্তু ময়দান ও বেলগাছিয়া স্টেশনের মেশিন কাজ করে না বলে জানিয়েছেন খোদ মেট্রো কর্তৃপক্ষ। টালিগঞ্জের স্ক্যানারটিও কয়েক দিন খারাপ ছিল। যে সব জায়গায় স্ক্যানার কাজ করছে না, সেখানে হ্যান্ড ডিটেক্টর দিয়েও ব্যাগ কিংবা যাত্রীদের তল্লাশি হয় না বলে অভিযোগ। তা ছাড়াও যাত্রীদের অভিযোগ, স্ক্যান করার জন্য ব্যাগ দিলেও, মেট্রোর সুরক্ষাকর্মীদের চোখ স্ক্রিনের দিকে থাকে না। তাঁরা নিজেরা গল্প করতে ব্যস্ত থাকেন। সেই ফাঁকে অনেক যাত্রীই ব্যাগ স্ক্যানারে না দিয়ে প্ল্যাটফর্মে ঢুকে পড়েন।
এ দিকে, যে প্রবেশপথগুলিতে স্ক্যানার নেই, সেখানে এখন আর আলাদা করে ব্যাগের তল্লাশিও হয় না। সেই প্রবেশপথগুলিতে ‘ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর’ না থাকায় যাত্রীদের শরীরের পরীক্ষাও হয় না। ফলে যাঁরা প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ধরতে ঢুকছেন, তাঁদের সঙ্গে যে কোনও বিপজ্জনক বস্তু ঢুকছে না, সে বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
মেট্রো সূত্রে খবর, কলকাতায় মেট্রো স্টেশনের ভিতরের নিরাপত্তা দেখার দায়িত্বে থাকে আরপিএফ এবং আরপিএসএফ। প্ল্যাটফর্মের বাইরে প্রতিটি স্টেশনে ঢোকার মুখে থাকে রাজ্য সরকার থেকে নিযুক্ত মেট্রো রেলওয়ে পুলিশ অর্থাৎ এমআরপি-র নিরাপত্তাকর্মী। এমআরপি-র মধ্যে রয়েছেন পুরুষ হোমগার্ড, মহিলা হোমগার্ড, রাজ্য পুলিশের আইবি-সহ সিভিল গ্রিন পুলিশ। প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গত কয়েক মাস আগে থেকেই প্রতি স্টেশনে চার জন করে সশস্ত্র আরপিএসএফ জওয়ান নিযুক্ত করেছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মূলত আত্মহত্যা রোখা, প্ল্যাটফর্মে অযথা ঘোরাঘুরি, ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সময়ে যাত্রীদের সজাগ করা, কেউ যাতে মেট্রো সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়তে না পারেন তা দেখা এবং যাত্রীদের সামগ্রিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই ছিল তাদের কাজ। কিন্তু সম্প্রতি সেই বাহিনীও থাকছে না।
তবে প্রতিটি সমস্যার পিছনেই লোকবল কমের ব্যাখ্যা দিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রোর এক সুরক্ষা আধিকারিকের কথায়, কলকাতা মেট্রোয় এই মুহূর্তে যে সংখ্যক আরপিএফ জওয়ান থাকার কথা, তার তুলনায় অনেকটাই কম রয়েছে। এই মুহূর্তে অনুমোদিত আরপিএফ থাকার কথা ৯৪০ জন। কিন্তু রয়েছে মাত্র ২৯১ জন। কয়েক দিন আগে কর্ণাটকের ভোটের জন্য আরপিএসএফ জওয়ানদেরও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ দিকে, জওয়ান কম থাকায় তাদের বদলি হিসেবে কোনও নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে ওই সুরক্ষা আধিকারিক জানান। মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “স্ক্যানার কম রয়েছে। বাকি স্টেশনের প্রতিটির প্রবেশপথে যাতে আরও স্ক্যানার বসানো যায়, তার জন্য ইতিমধ্যেই আরও ১১টি স্ক্যানারের জন্য রেলওয়ে বোর্ডকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। বাকি যা যা ত্রুটি রয়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” |
|
|
|
|
|