পড়ে আছে বাস-অটোর পারমিট, লক্ষ্য অধরা
ক দিকে যখন সরকারি পরিবহণের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তখন বেসরকারি বাস-মিনিবাস-অটোকে বাড়তি পারমিট দিতে চেয়েও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারল না পরিবহণ দফতর। সরকারি যানের অভাবে যাত্রীদের ভোগান্তি কমিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য এবং আয় বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই এই পরিকল্পনা করা হয়। সরকারের ব্যাখ্যা, আগ্রহী আবেদনকারীর সংখ্যা কম হওয়াতেই এই হাল। বিভিন্ন রুটে ১১০০ নতুন অটোর পারমিট দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে ৬৪৭টির আবেদনকারী মেলেনি। কমেছে বাস ও মিনিবাসের আবেদনকারীও।
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বারংবার সিএসটিসি-র বাস বাড়ানোর আশ্বাস দিলেও তা রূপায়িত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিভিন্ন যানের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়। বুধবার পাবলিক ভেহিক্লস বিভাগে (পিভিডি) নয়া আবেদনকারীদের পারমিট চূড়ান্ত হয়। দেখা যায়, নানা খাতে আয় বাড়লেও যাত্রী-পরিবহণে পারমিটে আগ্রহীর সংখ্যা কমেছে।
বেলতলার পিভিডি-তে নথিভুক্ত ১২৫টি অটোর রুটে অটো রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। এই সব রুটে অটো দিতে চেয়ে কিছুকাল আগে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল পিভিডি। কিন্তু ৫৫টি রুটে আবেদন কম জমা পড়ে। দেখা যাচ্ছে, চারটি রুটে নয়া অটো পারমিটের আবেদনকারী বেশ কম। এগুলির মধ্যে রয়েছে ৫০ (মেটিয়াবুরুজ থেকে আক্রা ফটক রোড) ও ১০৯ নম্বর রুট (মেটিয়াবুরুজ থেকে কাচ্চি সড়ক)। এই দু’টি রুটে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে যথাক্রমে ৫১টি এবং ৪৬টি আবেদন কম জমা পড়ে। ১২৩ নম্বর রুটে (বেহালা থেকে টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো) এবং ৫১ রুটে পারমিট দেওয়া যায়নি যথাক্রমে ৪২ ও ৪০ জনকে। ৬৯ ও ৯৬ নম্বর রুটে ২৫টি করে কম আবেদন জমা পড়েছে। ৩, ১১০ ও ১১৩ নম্বর রুটে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম জমা পড়ে যথাক্রমে ২৪টি, ২৭টি এবং ৩২টি আবেদন।
সিটু-নিয়ন্ত্রিত ‘কলকাতা অটো অপারেটর্স ইউনিয়ন’-এর সাধারণ সম্পাদক বাবুন ঘোষ বলেন, “অটো ছাড়া যাতায়াতের পরিবর্ত বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকায় কিছু রুটে অটোর চাহিদা কম। এ ছাড়াও অটোর স্ট্যান্ড হিসেবে জায়গার অপ্রতুলতাও কিছু রুটে একটা বড় সমস্যা। পরিবহণ দফতরকে এগুলো ভেবে দেখতে হবে।”
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, ২০১১-’১২ অর্থবর্ষে পিভিডি ৩৭টি নয়া মিনিবাসের পারমিট দেয়। পরের বছর তা কমে দাঁড়ায় ২৩-এ। চলতি অর্থবর্ষে মোট আবেদনই জমা পড়েছে ২৩টি। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে ৭টি আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। বাকি সবাইকে পারমিট দেওয়া গেলেও তা ১৬-র বেশি দাঁড়াবে না। মিনিবাস মালিকদের সংগঠনের সভাপতি অবশেষ দাঁ বলেন, “এক দিকে আমাদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে, অন্য দিকে এক শ্রেণির কন্ডাক্টর যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমাদের দিচ্ছেন না। সব মিলিয়ে এই ব্যবসায় আগ্রহ কমছে।”
বেসরকারি বিভিন্ন রুটে ২০১১-’১২ অর্থবর্ষে বাসের ১৪৪টি পারমিট দিয়েছিল পিভিডি। পরের বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩৬টিতে। পিভিডি-র ভাইস চেয়ারম্যান সব্যসাচী বাগচী বলেন, “বেসরকারি বাসের জন্য আমরা ১৪৬টি আবেদন পেয়েছিলাম। এর মধ্যে ১০৪ জনকে অফার লেটার দেওয়া হয়। অন্তত ১০০ আবেদনকারীকে পারমিট দেওয়া যাবে বলে আশা করছি।”
বেসরকারি বাস-মালিকদের সংগঠন ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটসের’ যুগ্ম সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এক দিকে ডিজেল এবং যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধি, অন্য দিকে পর্যাপ্ত ভাড়া না-বাড়ানো সব মিলিয়ে দেওয়ালে পিঠ আমাদের। স্বাভাবিক ভাবেই নয়া পারমিটে আগ্রহীর সংখ্যা কমছে।”
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর রাখছি।” পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, গাড়ির কর, রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স, স্মার্ট কার্ড, বিভিন্ন রকম আবেদনপত্র প্রভৃতি খাতে ২০১১-১২ অর্থবর্ষে পিভিডি আয় করেছিল ১৬৩ কোটি টাকা। ২০১২-১৩-তে তা বেড়ে হয়েছে ২১২ কোটি টাকা। একলপ্তে পিভিডিতে এত আয়বৃদ্ধি এই প্রথম।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.