|
|
|
|
প্রকাশ্য জনসভা থেকে অপহৃত গিলানির ছেলে |
সংবাদসংস্থা • লাহৌর |
গিয়েছিলেন দাদার হয়ে প্রচার করতে। প্রচার শেষে বাড়ির বাইরে বেরোতেই মুহূর্তের মধ্যে ঘিরে ধরল কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকবাজ। এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে একটা কালো হন্ডা গাড়িতে তাঁকে তুলে চলে গেল বন্দুকবাজরা। কয়েক মুহূর্তের ঘটনা। কিন্তু এর মধ্যেই ঘটে গেল এখনও পর্যন্ত পাকিস্তনের সাধারণ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে সব থেকে স্মরণীয় ঘটনা। মুলতানের মাটি এলাকায় বন্দুকবাজদের হাতে অপহৃত হলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির ছোট ছেলে আলি হায়দার গিলানি। এই ঘটনায় হায়দারের এক দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অন্য তিন দেহরক্ষী স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি।
মাত্র দু’দিন পরই সাধারণ নির্বাচন। দেশ জুড়ে কোথায় প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন নির্বাচনী প্রার্থীরা। তার বদলে সবাই ভীত সন্ত্রস্ত। সাংবাদিক দেখলেই মুখে কুলুপ আঁটছেন। একে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে তেহেরিক-ই-তালিবানের হুমকি। তার উপরে আজকের ঘটনায় সাধারণ নির্বাচনের সাফল্য বড়সড় প্রশ্নের মুখে।
দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আজ সকাল থেকে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপিংসে দেখা যাচ্ছে, ইউসুফের অন্য দুই ছেলে আলি মুসা আর আব্দুল কাদির কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে আলি বলছেন, “ভাইকে তুলে গেল। আমি কি করে নির্বাচন করতে দিই? |
|
এই বৈঠক শেষেই অপহৃত হন হায়দার। ছবি: রয়টার্স |
ভাইকে খুঁজে পাওয়া না গেলে আমার এলাকায় কোনও নির্বাচন হতে দেব না।” প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করতে রাজি না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন ইউসুফ রাজা গিলানি। এ বারেও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে পারবেন না। কিন্তু তাঁর তিন ছেলেই এ বারের নির্বাচনে মুলতানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
এখনও পর্যন্ত কেউই এই অপহরণের ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। তবে সন্দেহের তির তালিবানের দিকেই। নির্বাচনের প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রার্থীদের নির্বাচনে না দাঁড়ানোর হুমকি দিয়ে আসছিল তেহেরিক-ই-তালিবান। দেশের উত্তর-পশ্চিমে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে তালিবান হঠাতে যারা সেনা অভিযান সমর্থন করেছিল মূলত সেই দলগুলিই তেহেরিক-ই-তালিবানের আক্রমণের লক্ষ। এদের হুমকি আর মিছিলে একের পর এক বিস্ফোরণে আতঙ্কিত প্রার্থীরা খোলা এলাকায় আর প্রচার চালাচ্ছিলেন না। বদলে প্রার্থীরা প্রচারের মাধ্যম হিসেবে সংবাদপত্র আর টেলিভিশনের উপরেই অনেকটা নির্ভর করছিলেন। প্রয়োজনে কারও বাড়িতে গোপনে বৈঠক সারছিলেন তাঁরা। এ রকমই একটা বৈঠক সেরে বার হওয়ার সময়েই অপহৃত হলেন হায়দার। দলের এক মুখপাত্র শর্মিলা ফারুকি বললেন, “আমরা কবে থেকে সরকারকে অনুরোধ করছি আমাদের নিরাপত্তা দেওয়া হোক। আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কেউ শুনল না।”
ইউসুফ রাজা গিলানি অবশ্য পিপিপি-র সদস্যদের শান্ত থাকতে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ করেছেন। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী মীর হাজার কান খোসো হায়দারের অপহরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, হায়দারের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চলেছে। তবে এখনও পর্যন্ত হায়দার নিখোঁজই।
|
|
|
|
|
|