নির্দেশ সত্ত্বেও ভাতা দেয়নি ইসিএল, নালিশ আদালতে
মৃত কর্মীরা স্ত্রীকে বকেয়া ভাতা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ইসিএল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গেলে সেখানেও সেই রায় বহাল রাখা হয়। তার পরেও দেওয়া হচ্ছে না ভাতা, আদালতের কাছে এমন অভিযোগ জানিয়েছেন ওই মহিলা। এর পরেই কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হবে না, তা জানিয়ে ইসিএলকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
১৯৯৬ সালে ৯ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয় ইসিএলের গৌরান্ডি-বেগুনিয়া কোলিয়ারির কর্মী বাদল মাঝির। সেই বছরই ২৫ জুলাই তাঁর স্ত্রী বিপিনিদেবী খনি কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখে তাঁকে চাকরিতে নিয়োগের আবেদন জানান। বিপিনিদেবী জানান, ১৯৯৭ সালের ৩০ মে ওই সংস্থার ‘মেডিক্যাল বোর্ড’ তাঁকে কর্মক্ষম বলে ঘোষণা করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি। উল্টে ১৯৯৯ সালের ৮ এপ্রিল ইসিএল কর্তৃপক্ষ বিপিনিদেবীকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, তাঁকে মাসে মাসে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। কিন্তু প্রায় এক যুগ কেটে গেলেও কিছু দেওয়া হয়নি।
বিপিনিদেবীর দাবি, ২০১১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসিক ছ’হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া শুরু হয়। তিনি ইসিএলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখে দাবি করেন, মাসিক ভাতাই যদি দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে তাঁর স্বামী যখন মারা গিয়েছেন, বিধি মেনে সেই সময় থেকেই দিতে হবে।
বিপিনিদেবী অভিযোগ করেন, সংস্থা তাঁর আবেদন অগ্রাহ্য করেন। তাই ২০১২ সালের ১৪ জুলাই তিনি কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বিপিনিদেবীর আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, সে বছরের ১৮ অক্টোবর সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারপতি সোমবুদ্ধ চক্রবর্তীর এজলাস থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, সংস্থার বিধি মেনে ১৯৯৬ সাল থেকেই ভাতা দিতে হবে। বকেয়া ভাতা মিটিয়ে দিতে বলে আদালত। কিন্তু ইসিএল কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ না মেনে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। ২০১৩ সালের ৮ মার্চ এই ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি অরুণ মিত্র এবং জয়মাল্য বাগচির এজলাস থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সিঙ্গল বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছে তা অপরিবর্তিত থাকবে। সেই অনুযায়ী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়।
পার্থবাবু অভিযোগ করেন, ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশও ইসিএল মানেনি। তাই ২০ মার্চ তাঁর মক্কেল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে ইসিএলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার পিটিশন দাখিল করেন। ইসিএলের সিএমডি এবং সালানপুর এরিয়া কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। পার্থবাবুর দাবি, এর আগে অন্য এক খনি কর্মীর এই একই ধরনের মামলায় ইসিএল হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। সে ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রেখেছিল। সম্প্রতি হাইকোর্টের বিচারপতি সোমবুদ্ধ চক্রবর্তীর এজলাস থেকে কেন ইসিএলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হবে না, তা তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দাখিল করে জানাতে বলা হয়েছে বলে জানান পার্থবাবু।
কেন আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বকেয়া ভাতা মেটানো হচ্ছে না, সে ব্যাপারে ইসিএল কর্তৃপক্ষ কিছু জানাতে চাননি। তাঁরা শুধু জানান, এ ব্যাপারে যা বলার আদালতেই বলা হবে। সংস্থার সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে হলফনামা জমা দেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.